পুরুলিয়া ব্লক অফিসে পড়ে নষ্ট সবুজসাথীর সাইকেল, শুরু বিতর্ক
বর্তমান | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: সবুজসাথীর কয়েকশো সাইকেল পুরুলিয়া-১ ব্লকের এসজিএসওয়াই বিল্ডিংয়ের পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। সেগুলির জরাজীর্ণ অবস্থা হয়েছে। জমেছে ধুলোর পুরু আস্তরণ। অধিকাংশ সাইকেলেই মরচে পড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, কেন সাইকেলগুলি এই অবস্থায় পড়ে রয়েছে? কেন বণ্টন হয়নি পড়ুয়াদের মধ্যে? বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা আর্থ-সামাজিক প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম সবুজসাথী। রাজ্যের সব জেলায় সরকারি স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এই প্রকল্পের সুবিধা পায়। ২০১৪ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, নবম শ্রেণিতে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল দেওয়া হবে। সেই মতো স্কুল তাদের আবেদনপত্র সংগ্রহ করে জমা দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। এরপর সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে। জেলা থেকে সাইকেল পৌঁছয় ব্লকে। সেখান থেকে স্কুলে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণামতো ২০১৫ সাল থেকে সবুজসাথী প্রকল্পে সাইকেল বিলি শুরু হয়। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার ঝড় ঝাপটা এলেও পড়ুয়ারা একবারের জন্যও বঞ্চিত হয়নি সবুজসাথীর সাইকেল থেকে। সেই সাইকেল কেন পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে? এর দায় কি প্রশাসন এড়াতে পারে? এই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
ব্লকের এসজিএসওয়াই বিল্ডিং চত্বরে গেলেই দেখা যায়, নীচের তলার বারান্দা ও ঘরের মধ্যে পড়ে নষ্ট হচ্ছে কয়েকশ সাইকেল। প্রসাশন সূত্রে খবর, সাইকেলগুলি করোনা-কালের। ওই সময় বণ্টনের পরেও বহু সাইকেল পড়ে ছিল। ওই সময় বহু পড়ুয়া স্কুল ছেড়ে চলে গিয়েছিল। ড্রপআউট পড়ুয়াদের সাইকেল বিলি সম্ভব হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, পরের বছর কেন সেই সাইকেল বিলি করা হল না? কেন মজুত থাকা সাইকেলের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি? উত্তর জানার জন্য পুরুলিয়া-১ ব্লকের বিডিওকে বহুবার ফোন করা হয়েছিল। তিনি ফোন তোলেননি। মেসেজ করা হলেও উত্তর পাওয়া যায়নি।
এনিয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাত বলেন, করোনার সময় থেকেই সাইকেলগুলি জমছে। যতদূর জানি প্রশাসন থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠিও করা হয়েছিল। কিন্তু কোনও কারণে একটা গ্যাপ রয়ে গিয়েছে। কেন তা থাকল, তা দেখা হবে।
বিজেপির জেলা সভাপতি বিষয়টি জেলাশাসকের নজরে এনেছেন বলে সূত্রের খবর। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি গৌতম রায় বলেন, এক একটি সাইকেল তিন-চার হাজার টাকা করে নির্দিষ্ট সংস্থার থেকে কিনছে। তারপর পড়ে থাকা সাইকেলগুলি সেই সংস্থাকেই কম টাকায় বিক্রি করছে। সেগুলিই সারিয়ে পড়ুয়াদের বিলি করা হচ্ছে। মাঝখান থেকে কাটমানি খাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা।
তবে, বিজেপির তোলা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া। তিনি বলেন, বিজেপি সব কিছু নিয়েই রাজনীতি করে। তাই ওরা বানিয়ে বানিয়ে এসব কথা বলছে। পড়ুয়ারা নিয়ে যায়নি বলেই সাইকেল মজুত থেকে গিয়েছে। তবে ব্যাপারটা খোঁজ নিয়ে দেখব।