সংবাদদাতা, মাথাভাঙা: শুক্রবার শীতলকুচি ব্লকের খলিসামারি গ্রাম পঞ্চায়েতের সোনার চালুনে জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর জখম হন ১০ জন। এরমধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগও উঠেছে। এ ঘটনায় গ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে এলাকায় আসে শীতলকুচি থানার পুলিস। বেশ কয়েকজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সন্ধ্যার পরেও পরিবেশ ছিল থমথমে। আহতদের মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখন থেকে চারজনকে কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনার চালুন গ্রামের স্বপন বর্মন ও উকিল বর্মনের পরিবার একটি জমি নিয়ে এদিন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ওই জমিটি স্বপন বর্মন বংশ পরম্পরায় চাষাবাদ করে আসছেন। সম্প্রতি উকিল বর্মন সহ তাঁর তিন ভাই জমিটি তাঁদের দাবি করে। বিবাদ চলাকালীন কয়েকদিন আগে উকিল বর্মন জোর করে জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করেন।
এদিন স্বপন বর্মন জমিতে এলে উকিল বর্মন তাঁর তিন ভাই ও ছেলেরা মিলে স্বপন বর্মনকে মারধর করে। তার বোন জামাই শঙ্কনাথ বর্মন বাঁচাতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেসময়ে কয়েকজন প্রতিবেশী এগিয়ে এলে তাঁদেরও মারধর করা হয়েছে। যদিও উকিল বর্মনের ভাইপো সবুজ বর্মনের দাবি, তাঁদের উপরই স্বপন বর্মনরা প্রথম হামলা করে। তাঁদেরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে স্বপন বর্মনের কাকিমা সুজাতা বর্মন বলেন, জমিটি আমরা কয়েক পুরুষ ধরে চাষবাদ করে আসছি। আচমকা উকিল বর্মনরা দাবি করে জমিটি তাঁদের। ওদের পরিবারে লোকজনের সংখ্যা বেশি। এর আগে জোর করে জমিতে ধানের চারা লাগিয়েছে। এদিন ভাইপো স্বপন জমিতে গেলে ওঁকে মারধর করে। আমাদের কয়েকজন শরিক বাঁচাতে গেলে তাঁদেরও মারধর করেছে। আমার ছেলে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। বিকেলে ঘরের বাইরে বের হতেই ওকেও ব্যাপক মারধর করেছে। বর্তমানে ছেলে শীতলকুচি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি।
সবুজ বর্মন বলেন, জমিটি আমাদের। আমাদের কাছে সমস্ত নথিপত্র রয়েছে। এদিন ওরাই আমাদের উপর হামলা চালায়। আমার জ্যাঠতুতো দাদা চন্দ্রজিৎ বর্মন গুরুতর আহত হয়েছে।
দু’পক্ষই জানিয়েছে, শীতলকুচি থানায় মারধরের অভিযোগ দায়ের করা হবে। মাথাভাঙার মহকুমা পুলিস আধিকারিক সমরেন হালদার বলেন, শীতলকুচিতে একটি জমি নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ এলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে জখমদের চিকিৎসা চলছে। - নিজস্ব চিত্র