• অনাস্থা পাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হস্তক্ষেপ তৃণমূলের কাউন্সিলাররা ডিগবাজি খেলেও জট অব্যাহত
    বর্তমান | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, তুফানগঞ্জ: দল শাসিত তুফানগঞ্জ পুরসভা নিয়ে টনক নড়ল কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের। চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শুক্রবার তৃণমূল নেতৃত্ব কাউন্সিলারদের নিয়ে সভা করে। তাতে কাউন্সিলারা ডিগবাজি খেলেও জট পুরোপুরি কাটেনি। 


    দলীয় সূত্রে খবর, সভায় চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা ঈশ্বোরকে মেনে নিলেও ভাইস চেয়ারম্যান তনু সেনকে মানতে চাইছেন না কাউন্সিলাররা। স্বভাবতই পুরসভার ক্ষমতা দখল নিয়ে শাসকদলের বিরোধ এখনও পুরোপুরি মেটেনি। সমগ্র ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর আলোড়ন পড়েছে। 


    মহিলা তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, যে কোনও গণতান্ত্রিক সংস্থায় আস্থা ও অনাস্থা আসতেই পারে। এটা সাংবিধানিক অধিকার। এখন অনাস্থায় যা ফলাফল হবে, তা মেনে নিতে হবে। এর থেকেই বোঝা যায়, তৃণমূলে গণতন্ত্র রয়েছে। 


    তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক অবশ্য বলেন, তুফানগঞ্জ পুরসভায় কাউন্সিলারদের মধ্যে সামান্য ভুল বোঝাবুঝি ছিল। আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে। আপাতত আগের পুরবোর্ড বহাল থাকছে। 


    ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার তুফানগঞ্জ পুরসভা নিয়ে তৃণমূলের নাটক চরমে উঠেছে। বৃহস্পতিবার তলবি সভা করে চেয়ারপার্সনকে অপসারিত করার সিদ্ধান্ত নেন বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলাররা। তাঁরা সেই সিদ্ধান্ত ১৮ ফেব্রুয়ারির পর কার্যকর করার পরিকল্পনা নেন। এমন প্রেক্ষাপটে আসরে নামে দলের জেলা কমিটি। এদিন কোচবিহার শহরে দলের জেলা পার্টি অফিসে পুরসভার চেয়ারপার্সন, ভাইস চেয়ারম্যান সহ সমস্ত কাউন্সিলারকে নিয়ে বৈঠক করেন জেলা সভাপতি। দীর্ঘক্ষণ ধরে চলা বৈঠকে কাউন্সিলাররা ডিগবাজি খেলেও নাটকের পুরোপুরি সমাপ্তি হয়নি। 


    বৈঠকের পর বিক্ষুব্ধদের মধ্যে ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুধাংশুশেখর সাহা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের জেলা সভাপতির নির্দেশে চেয়ারপার্সনকে মেনে নিচ্ছি। তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও ক্ষোভ নেই। তিনিই চেয়ারপার্সন থাকবেন। কিন্তু ভাইস চেয়ারম্যানের অপসরণের দাবি দলের জেলা সভাপতির কাছে জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দাবিপত্রে ১০ জন কাউন্সিলার সই করেছেন। সভাপতির মাধ্যমে এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। 


    সংশ্লিষ্ট পুরসভায় আসন সংখ্যা ১২টি। ২০২২ সালের পুর নির্বাচনে বিরোধী শূন্য করে তৃণমূল। সংশ্লিষ্ট পুরসভা পরিচালনা নিয়ে শাসকদলের বিরোধ দীর্ঘদিনের। স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে ১৭ জানুয়ারি ১০ জন কাউন্সিলার চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চেয়ারপার্সন ও ভাইস চেয়ারম্যান তলবি সভা ডাকেননি। এজন্য বৃহস্পতিবার কাউন্সিলাররাই সভা করে অনাস্থা পাশ করেন। এদিন দলীয় বৈঠকের পর চেয়ারপার্সনের দাবি, সমস্ত সমস্যা মিটেছে। সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে শহরের উন্নয়নমূলক কাজে জোর দেব।  
  • Link to this news (বর্তমান)