সাত বছর আগে প্রয়াত স্ত্রীর নামে এল নয়া ভোটার কার্ড!
বর্তমান | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, বারুইপুর: ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়ে এখন দেশজুড়ে হইচই চলছে। মহারাষ্ট্র ও দিল্লির ভোটে অস্বাভাবিক হারে ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে তথ্য সহ অভিযোগ এনেছে বিরোধীরা। গত বুধবার তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও অভিযোগ করেছেন, প্রকৃতদের বাদ দিয়ে ‘বহিরাগতদের’ নাম ভোটার তালিকায় ঢোকানো হচ্ছে। এই আবহে সামনে এল বিস্ময়কর ঘটনা! স্পিড পোস্টের মাধ্যমে সাত বছর আগে মৃত স্ত্রীর নামে নতুন ভোটার কার্ড হাতে পেলেন চম্পাহাটির সর্দারপাড়ার বাসিন্দা পঞ্চানন চক্রবর্তী। হঠাৎ করে কেন এখন একটি নতুন ভোটার কার্ড এল তাঁর স্ত্রীর নামে, ভেবে তার কোনও কূলকিনারা পাচ্ছেন না পঞ্চাননবাবু। নতুন কার্ডটি নিয়ে তিনি কী করবেন, বুঝে উঠতে না পেরে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত কার্যালয়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও তরফেই এই ঘটনার সুষ্ঠু ব্যাখ্যা মেলেনি।
পঞ্চাননবাবু বলেন, ‘আমার স্ত্রীর ভোটার কার্ড আগে থেকেই রয়েছে। তারপর আবার নতুন ভোটার কার্ড কীভাবে আসতে পারে? নির্বাচন কমিশন কি কোনও যাচাই না করে কার্ড পাঠিয়ে দিল!’ পঞ্চায়েত থেকে অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। চম্পাহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অসিতবরণ মণ্ডল বলেন, ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’ চম্পাহাটি রেলগেটের কাছে পান-বিড়ির একটি ছোট্ট দোকান রয়েছে পঞ্চাননবাবুর। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ছেলে, বৌমা ও নাতিকে নিয়ে তাঁর সংসার। পঞ্চাননবাবু বলছিলেন, ‘২০১৮ সালে আমার স্ত্রী বেবি চক্রবর্তী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরবর্তী ভোটের আগে নিয়মমতো ভোটার তালিকা থেকে স্ত্রীর নাম বাদও দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে তখন সবে আমি ভাত খেয়ে একটু বিশ্রাম নিচ্ছি। সেই সময় ক্যুরিয়ার সার্ভিসের একটি ছেলে এসে দরজায় ধাক্কা দেয়। বলে, কার্ড আছে। সেই খাম হাতে নিয়ে খুলেই অবাক হয়ে যাই। স্ত্রীর নামে নতুন ভোটার কার্ড দেখে আমরা সবাই ভ্যাবাচাকা খেয়ে যাই। অথচ, স্ত্রী মারা যাওয়ার পর পুরনো ভোটার কার্ড দিয়েই যাবতীয় জরুরি কাজ মেটানো হয়েছে। কোথাও কোনও সমস্যা হয়নি।’ এখানেই পঞ্চাননবাবু সহ অনেকের প্রশ্ন, ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি সহ কোনও ধরনের কারচুপি কি এভাবেও চলছে? যদি তাই হয়, সেক্ষেত্রে এই ঘটনার জল অনেক দূর গড়াতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। নিজস্ব চিত্র