• অচেনা সাগরে ডিঙ্গা ভাসালেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়, সঙ্গীতশিল্পীর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর
    আনন্দবাজার | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘ রোগভোগের পর শনিবার ভোরে তাঁর গানের পঙ্‌ক্তি মেনেই যেন অচেনা সাগরে ডিঙ্গা ভাসালেন। বয়স ৮৩ বছর। বছরের শুরু থেকেই অসুস্থতা কাবু করেছিল তাঁকে। তখন থেকে তিনি এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলা সঙ্গীত দুনিয়া। খবর, শিল্পীর প্রয়াণের খবর পেয়েই হাসপাতালে ছুটে যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন।

    আরও খবর, প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে রবীন্দ্রসদনে। দুপুর দুটো থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত দেহ রাখা থাকবে সাধারণের জন্য। ইতিমধ্যেই সেখানে উপস্থিত গান স্যালুটের দল। বিকেল ৪টে নাগাদ শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানাতে রবীন্দ্রসদনে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতুল মুখোপাধ্যায় দেহ যে হেতু দান করা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে, তাই বিকেল ৪টের পর সেখানেই আবার ফিরিয়ে আনা হবে।

    প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। সমাজমাধ্যমে শোক জানিয়ে তিনি লেখেন, “আধুনিক বাংলা গানের খ্যাতনামী শিল্পী, গীতিকার প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে আমি শোকাহত।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, দিন কয়েক আগেই হাসপাতালে গিয়ে শিল্পীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। শিল্পীর মৃত্যুতে বাংলা গানের জগতে অপূরণীয় ক্ষতি হল। যত দিন বাংলা গান থাকবে তত দিন ‘আমি বাংলায় গান গাই’ বাঙালির মুখে মুখে ফিরবে। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, “আমি গর্বিত, এমন গুণী মানুষকে আমাদের সরকার তাঁর যোগ্য সম্মান জানাতে পেরেছিল। রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান ‘বঙ্গবিভূষণ’ থেকে শুরু করে ‘সঙ্গীত সম্মান’, ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’, ‘নজরুল স্মৃতি পুরস্কার’ সবই তিনি পেয়েছেন।” তিনি শিল্পীর পরিবার, পরিজন এবং অগণিত গুণগ্রাহীকে আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন।

    শিল্পীর গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও সাগরে সাথী রে’ অন্যতম জনপ্রিয় গান। শিল্পীর গানের গুণমুগ্ধ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানেই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। সবিস্তার জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল শিল্পীর পরিবারের সঙ্গে। তাঁর পরিবারের এক সদস্য কান্না চেপে বলেন, “এই মুহূর্তে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।”

    এসএসকেএমের মেন ব্লকেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তাঁর জন্য গঠন করা হয়েছিল মেডিক্যাল বোর্ড। মুখ্যমন্ত্রী নিয়মিত চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। খবরাখবর নিতেন শিল্পীর।

    অধুনা বাংলাদেশের বরিশাল জেলায় ১৯৪২ সালের ২৫ জুন জন্মগ্রহণ করেছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের শিক্ষক। ছোট থেকেই গান লিখে তাতে সুর দিয়ে গাওয়ার ঝোঁক ছিল তাঁর। প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে পাদপ্রদীপের আলোয় আনে তাঁর গাওয়া ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এ ছাড়া, সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবির নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী ছিলেন তিনি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)