• ১৫ কোটিতে ঢেলে সাজছে স্টেট ড্রাগ টেস্টিং ল্যাব
    এই সময় | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • অভিযোগ, ওষুধের গুণমান যাচাইয়ের পরিকাঠামো এ রাজ্যে মান্ধাতার আমলের। অভাব লোকবলের, যন্ত্রপাতিও আধুনিক নয়। তাই রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের ল্যাব পরিকাঠামোর অপ্রতুলতা নিয়ে প্রশ্ন দীর্ঘদিনের। অভিযুক্ত ব্যাচের ওষুধ ও ইন্ট্রাভেনাস (আইভি) ফ্লুইডের মান পরখের প্রক্রিয়ায় দেরি হওয়ায় সাম্প্রতিক রিঙ্গার্স ল্যাকটেট ও স্যালাইন বিতর্কে সেই অভিযোগ ফের মাথাচাড়া দিয়েছে।

    এ বার তাই পরিকাঠামো শোধরাতে বিপুল টাকা খরচ করছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। লক্ষ্য, ওষুধের গুণমান যাচাই করতে ভিন রাজ্যে যাতে আর নমুনা পাঠাতে না হয়, আর টেস্টিংও হয় দ্রুত।

    ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবকে ঢেলে সাজার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি টেন্ডার ডেকেছে ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশন। যন্ত্রপাতি কিনতে প্রায় ১৫ কোটি টাকার বাজেট ধার্য করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। ই-টেন্ডার ডাকা হয়েছে ডায়োড অ্যারে ডিটেক্টর-সহ হাই–পারফরম্যান্স লিক্যুইড ক্রোমাটোগ্রাফির মতো তিনটি যন্ত্রের জন্য, বরাদ্দ ২.৭৫ কোটি টাকা। রয়েছে ২.৫০ কোটি টাকা দামের একটি ট্রিপল কোয়াড, ২.৪০ কোটি টাকা দামের ট্রিপল কোয়াড্রুপোল জিসি-এমএস এবং ২ কোটি টাকা দামের ইন্ডাকটিভলি কাপলড প্লাজ়মা মাস স্পেকটোমেট্রির মতো যন্ত্রও।

    স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, এমন ১৩ রকমের মোট ৩৭টি মহার্ঘ ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি কেনা হচ্ছে ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবের জন্য। সবচেয়ে কম দামের যন্ত্রটির (ইউভি-ভিস স্পেকট্রোফোটোমিটার) দামও ৯ লক্ষ টাকা। কেনা হচ্ছে হাইটেক নানা রকম অ্যানালিটিক্যাল ইন্সট্রুমেন্টও।

    বসানো হচ্ছে ৩৫ লাখ টাকার অ্যানালিটিক্যাল ওয়াটার পিউরিফিকেশন সিস্টেম, ৫০ লক্ষ টাকার প্রিন্টার-সহ অ্যানালিটিক্যাল ব্যালান্স মেশিন এবং ১.১০ কোটি টাকা দামের মাইক্রো-ব্যালান্স প্রিন্টার। ইতিমধ্যেই টেন্ডার দিয়ে সরবরাহকারী সংস্থা বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।

    মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশনের এক আধিকারিক জানান, তাঁদের কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে ইচ্ছুক সংস্থাগুলির সঙ্গে এই টেন্ডার নিয়ে আলোচনার জন্য একটি প্রি–বিড মিটিং হবে আগামী মঙ্গলবার। অনলাইনে দরপত্র জমা দেওয়া যাবে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তার পর প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দেওয়ার জন্য ৪ মার্চ বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় মিলবে।

    আগামী ৬ মার্চ বিকেল ৫টার পরে সব দরপত্র প্রকাশ্যে আনা হবে এবং তার পর প্রতিটি যন্ত্রের জন্য বেছে নেওয়া হবে বিভিন্ন সংস্থাকে। এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, ‘নির্বাচিত সংস্থাকে বরাত দেওয়ার সর্বোচ্চ ৪৫ দিনের মধ্যে যন্ত্রগুলি ইনস্টল করতে হবে।’

    এখন সারা রাজ্যের সরকারি সরবরাহের যাবতীয় ওষুধের পরীক্ষা তো হয়ই ড্রাগ কন্ট্রোলের অধীন এই টেস্টিং ল্যাবে। পাশাপাশি, বিভিন্ন অভিযানে মাদক সন্দেহে বাজেয়াপ্ত অসংখ্য ওষুধের নমুনাও মামলার প্রয়োজনে এই ল্যাবে পাঠায় নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো ও পুলিশ।

    সেই নমুনার সংখ্যা অত্যন্ত বেশি হওয়ায় গুণমান পরীক্ষার প্রক্রিয়া ধাক্কা খায়। প্রচুর ‘ব্যাক-লগ’ জমে থাকে। তার উপর রয়েছে লোকবলের অভাব। ড্রাগ কন্ট্রোলের এক আধিকারিক বলেন, ‘যে অত্যাধুনিক মানের ল্যাব এ বার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যে সব স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে লোকবলের সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)