• ‘বাংলাকে বড় ভালোবাসতেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়,’ গায়কের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ অজয় চক্রবর্তী, হৈমন্তী শুক্লা, শ্রাবণী সেন, লোপামুদ্রা মিত্ররা
    এই সময় | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • দীর্ঘ লড়াইয়ের অবসান। প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। সপ্তাহ দুয়েক ধরে এসএসকেএম হাসপাতালে চলছিল তাঁর চিকিৎসা। অন্ত্রের একটি অস্ত্রোপচারের পর হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর। পরবর্তীতে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণের শিকারও হয়েছেন। সঙ্কটজনক ছিল তাঁর শারীরিক অবস্থা। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫), প্রয়াণ ঘটেছে গায়কের। সকাল ১০টায় হাসপাতালেই না-ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন গায়ক। বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনে এই সময় অনলাইন-এর কাছে শোকপ্রকাশ করেছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, হৈমন্তী শুক্লা, শ্রাবণী সেনরা।

    ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘ডিঙা ভাসাও সাগরে’-এর মতো কালজয়ী গান গেয়েছিলেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়। ‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ ছবিতেও গান গেয়েছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী। প্রয়াত গায়কের বাংলার প্রতি ভালোবাসার কথা প্রথমেই উল্লেখ করে বলেন, ‘বেশি আলাপ না থাকলেও আমি প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের গানের শ্রোতা। তাঁর কণ্ঠে ‘আমি বাংলায় গান গাই’ বিশেষ ভাবে পছন্দ করি। তিনি বাংলাকে খুবই ভালোবাসতেন। সবাই একে একে চলে যাচ্ছেন, এটা ভেবেই মনটা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। সকালে উঠেই মন খারাপ করা খবরটা পেলাম। কিছুই ভালো লাগছে না।’

    সম্প্রতি ছোট ভাইকে হারিয়েছেন শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা। প্রতুল মুখোপাধ্যায় যে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন, সে খবর তিনি রেখেছিলেন। গায়কের প্রয়াণে ভীষণই ভেঙে পড়েছেন হৈমন্তী। ধরা কণ্ঠে বলেন, ‘কী বলি আর! ভালোবাসার ও ভালো লাগার মানুষগুলোকে হারিয়ে ফেলছি। আমার ভাইটা চলে গেল। এখন প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের মতো একজন সৎ গায়ককেও হারালাম। ভারী মিষ্টি মানুষ ছিলেন। আমাদের গান নিয়ে গল্প হয়েছে। কত অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছে। ওঁর গানে বাংলার প্রতি টান অনুভব করেছি। তাঁর গান শুনে বলতাম, ‘কী ভালো গাইলেন’, প্রতুলবাবু অবাক হয়ে হেসে বলতেন, ‘আমার কত সৌভাগ্য, হৈমন্তী শুক্লার আমার গান ভালো লেগেছে’। আমি লজ্জা পেতাম আর বলতাম, ‘এ সব আপনি কী বলছেন?’ সব কথাগুলো মনে পড়ে যাচ্ছে একে একে।’

    রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়িকা শ্রাবণী সেন জানান, প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে খুব বন্ধুত্ব না থাকলেও, তাঁর গানের ভক্ত ছিলেন। বলেন, ‘খবরটা পেয়ে খারাপ লাগছে। চমৎকার গান গাইতেন। ভোলার নয়।’ অন্যদিকে গায়িকা লোপামুদ্রা মিত্রর মনটাও খারাপ। জানালেন, কলকাতা বইমেলায় তাঁর সঙ্গে প্রথম আলাপ হয় প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের। বলেন, ‘মাঠে গান-বাজনা হতো। আমি খালি গলায় গান গাইতাম। তিনিও তাই। প্রতুলদার সঙ্গে আমার বয়সের তফাৎ অনেকটাই। কিন্তু আমরা কনটেম্পোরারি। তাঁর প্রচুর কবিতার গান আছে। সেটাও মিল আছে। আমাদের সম্পর্ক বহুকালের। বলতেন, বেণীমাধব গাওয়া ঠিক না। আমি বলতাম, এই গান আপনাকে শুনতেই হবে। ভীষণ হিট।’
  • Link to this news (এই সময়)