আবারও অভিযুক্ত পালানোর ঘটনা। কিছু দিন আগে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে বিচারাধীন বন্দি নিয়ে আদালতে আসার সময়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। এ বার শিলিগুড়িতে পুলিশের একেবারে চোখের সামনে দিয়ে পালিয়ে গেলেন অভিযুক্ত। শনিবার দুপুরে এই ঘটনায় শিলিগুড়ি আদালত চত্বরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। মদ খেয়ে ঝামেলা পাকানোর অভিযোগে শুক্রবার রাতে শিলিগুড়ির খড়িবাড়ি থানার পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ি এলাকা থেকে বিকাশ কারকি নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নেপালের বাসিন্দা বিকাশকে শনিবার আরও ৭ ধৃতের সঙ্গে শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে পেশ করার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল।
খড়িবাড়ি থানার পুলিশ আদালতে আটটি চালান জমা করে। কিন্তু ধৃতদের তালিকা মিলিয়ে দেখার সময়ে একজন কম দেখা যায়। এর পরই আদালতের তরফে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং শিলিগুড়ি গ্রামীণ পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। শিলিগুড়ি থানার এসিপি আসার পর আদালতের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়।
দেখা যায়, অভিযুক্ত বিকাশ বাকিদের সঙ্গে প্রিজ়ন ভ্যান থেকে নামলেও আদালতের সেলে না গিয়ে পাশে থাকা লোহার সিঁড়িতে উঠে যান। এর পরই চম্পট দেন। খবর পেয়ে আদালত চত্বরে যান নকশালবাড়ির এসডিপিও। যৌথ ভাবে দুই পুলিশ আধিকারিক প্রিজ়ন ভ্যানে দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। গোটা ঘটনায় আদালত চত্বরের নিরাপত্তা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
একই সঙ্গে অভিযুক্তের খোঁজে শহরজুড়ে চিরুনিতল্লাশি শুরু হয়েছে। শহরের সমস্ত প্রবেশ ও বেরোনোর পথে নাকা তল্লাশি বসানো হয়েছে। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (পূর্ব) রবিন থাপা বলেন, ‘আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।’ কার্শিয়াং-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক রায় বলেন, ‘কার গাফিলতিতে অভিযুক্ত পালিয়েছে সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগেই ইসলামপুরে খুনে অভিযুক্তদের আদালতে আনার পথে আক্রান্ত হয়েছিল পুলিশ। বন্দির গুলিতে জখম হয়েছিলেন প্রিজ়ন ভ্যানের দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা। জানা গিয়েছিল, আদলতেই অভিযুক্তদের কাছে পিস্তল সাপ্লাই হয়েছিল। এরপরই রাজ্যের সব আদালতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেইমতো শিলিগুড়ি আদালতেও পদস্থ পুলিশকর্তারা এসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখে যান। এর পরও এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে দার্জিলিং জেলা পুলিশ গোটা ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।