• ‘লিখে লিখে মেঝে ভরিয়ে দিতেন’, প্রতুলের শৈশবকালের স্মৃতিচারণা চুঁচুড়ার পাড়ার বাসিন্দাদের
    এই সময় | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ‘এই বাংলার মায়াভরা পথে হেঁটেছি এতটা দূর…’। ছকভাঙা সেই শিল্পী জীবনের পথে হাঁটা থামালেন শনিবার। যাঁর কলম দিয়ে আগুন ঝরত, গলায় ছিল মেঠো সুর, সেই মানুষটির শৈশবের অনেকটা সময় কেটেছিল হুগলির চুঁচুড়ায়। পড়াশোনা, মাঠ জুড়ে দাপিয়ে ফুটবল খেলা, কবিতা লেখা, নাটক সব কিছুরই স্মৃতিচিহ্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে চুঁচুড়ার মতিঝিল রোড এলাকায়। প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের খবর আসতেই অন্ধকার নেমে এসেছে গোটা পাড়ায়। ছলছল চোখে ‘পুরোনো সেই দিনের কথা’ তুলে ধরলেন স্থানীয়রা।

    প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের বাবা প্রভাত মুখোপাধ্যায় বরিশাল থেকে এসে চুঁচুড়ায় বাড়ি করেছিলেন। বাড়িটি এলাকায় ‘লালবাড়ি’ নামে পরিচিত ছিল। হুগলি কলেজিয়েট স্কুলে পড়তেন প্রতুল। বেশিরভাগ ক্লাসেই প্রথম স্থান অধিকার করতেন। পড়াশোনার পাশাপাশি ছিল ফুটবল খেলার নেশাও। মতিঝিলের মাঠেই নিত্য দেখা যেত তাঁকে।

    প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের এক আত্মীয় সুখরঞ্জন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘খুব ছোটবেলায় ওঁকে দেখেছি। পাশের বাড়ির বারান্দায় অঙ্ক কষতেন। লিখতে লিখতে মেঝে ভরিয়ে দিতেন। খুব মেধাবী ছিলেন ছোট থেকেই।’ স্থানীয়রা জানান, মতিঝিলের চেকালিন ক্লাবের নামকরণ তাঁরই করা। বন্ধুরা মিলে সরস্বতী পুজো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতেন। পরে শুরু হয় দুর্গাপুজোও।

    শৈশব থেকেই নাটক ছিল তাঁর প্রাণ। পাড়াতেই একটি সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল গড়ে তুলেছিলেন প্রতুল। প্রতিবেশী কিশোর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘কী অসাধারন নাটক করত! ওদের বাড়িতে তখন বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। আমাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ থাকায় মাঝেমধ্যেই আসত। মেঝেতে বসে অঙ্ক করত। তবে বহুদিন ওর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। পরে যোগাযোগ করে একবার ক্লাবের অনুষ্ঠানে নিয়ে এসেছিলাম। বলেছিলাম তোমাদের বাড়িটা আছে, শুধু তোমরাই নেই।’

    মুক্তির স্বাদ চেনাতেন যে মানুষটা, তাঁর শরীরেই বাসা বেঁধেছিল নিউমোনিয়া, হৃদরোগ। ৮২ বছর বয়সে থামল পথচলা। শনিবার কলকাতার রবীন্দ্র সদনে গান স্যালুটের মাধ্যমে শেষ বিদায় জানানো হয় শিল্পীকে।

  • Link to this news (এই সময়)