• রাজ্যকে মাওবাদী মুক্ত করায় স্থানীয়দের ভূমিকা, উন্নয়নের প্রশংসা করলেন ডিজি
    বর্তমান | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ২০১০ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বর্তমান শিলদা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চত্বরে ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদীরা হামলা চালিয়েছিল। হামলায় ২৪ জন জওয়ানের প্রাণ গিয়েছিল। শনিবার শিলদা স্ট্র্যাকো ক্যাম্পে শহিদ জওয়ানদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। শহিদ স্মরণের অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদী মুক্ত হওয়ার পিছনে পুলিস ফোর্স, স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা ও উন্নয়নের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন রাজ্য পুলিসের ডিজি রাজীব কুমার। 


    দেশের অন্যতম মাওবাদী হামলা ঘটেছিল শিলদার ইএফআর ক্যাম্পে। জনবহুল শিলদা এলাকায়  মাওবাদীরা অস্ত্র হাতে ঢুকে পড়েছিল। নির্বিচারে গুলি চালিয়ে জওয়ানদের হত্যা করেছিল। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ক্যাম্প। লুট করা হয়েছিল ক্যাম্পে রাখা একাধিক একে-৪৭ ও হাজারের ওপর কার্তুজ। নৃশংস এই ঘটনায় শিহরিত হয়ে উঠেছিল সারা দেশ। অতর্কিত হামলার মধ্যেই জওয়ানরা পাল্টা প্রতিরোধ ছুড়ে দিয়েছিলেন। জওয়ানদের গুলিতে পাঁচ মাওবাদী খতম হয়। শিলদা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র লাগোয়া ফাঁকা চত্বর আজও সেই রক্তাক্ত স্মৃতি বহন করে চলেছে। রাজ্যে পালাবদলের পর অদূরে স্থায়ী স্ট্রাকো (স্পেশালি ট্রেন্ড আর্মড কম্পানি) ক্যাম্প তৈরি করা হয়। ক্যাম্পের ভিতর শহিদ মিনার তৈরি করা হয়েছে। চব্বিশজনের নাম, ছবি সহ চব্বিশটি মেহগনি গাছ লাগানো হয়েছে। জেলা পুলিস ২০১২ সাল থেকে এখানে প্রতিবছর শহিদ স্মরণ দিবস পালন করে। এদিন রাজ্য ও জেলার পুলিস ও প্রশাসনের উচ্চ আধিকারিকরা শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও স্মরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে রাজ্য পুলিসের ডিজি ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম, এডিজি (সিআইএফ) অজয় নন্দা, এডিজি (পশ্চিমাঞ্চল জোন) অশোক কুমার প্রসাদ, আইজি (বাঁকুড়া রেঞ্জ) শিষরাম ঝাঝোরিয়া, আইজি (সিআইএফ) সব্যসাচী রমন মিশ্র, ডিআইজি (ইএফআর) স্বপন সরকার, ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল, ঝাড়গ্রামের পুলিস সুপার অরিজিৎ সিনহা, জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার (অপারেশন) গুলাম সরওয়ার, বেলপাহাড়ির এসডিপিও শ্রেয়া সরকার সহ অনান্য পুলিস কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ডিজি রাজীব কুমার এদিন বলেন, আমরা দেশের মধ্যে দ্বিতীয় রাজ্য যেখানে মাওবাদীদের মুক্ত করতে পেরেছি। অন্ধ্রপ্রদেশ ১০ থেকে ১২ বছর সময় নিলেও আমরা রাজ্যকে সাত থেকে আট বছরের মধ্যে মাওবাদী মুক্ত করতে পেরেছি। আমাদের  ৮৮ জন সহকর্মী এখানে বলিদান দিয়েছেন। এখানকার মানুষের সহযোগিতা ও উন্নয়নমূলক কাজ এই অঞ্চলকে মাওবাদী মুক্ত করতে সম্ভব করেছে। শহিদ পরিবারের এক সদস্য বলেন, আমি তখন দশম শ্রেণিতে পড়ি। এই ঘটনায় আমাদের জীবন পুরোপুরি বদলে যায়। বাবার মৃত্যুর পর সরকার থেকে দেওয়া চাকরি পেয়েছি। পনেরোই ফেব্রুয়ারি এলেই সেদিনের ভয়াবহ স্মৃতি ফিরে আসে। 
  • Link to this news (বর্তমান)