সংবাদদাতা, কান্দি: ভরতপুরের এক যুবকের হায়দরাবাদে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিস জানিয়েছে, মৃতের নাম গোলাম নবী শেখ(১৮)। তার বাড়ি মুনসুরপুর গ্রামে। প্রায় দেড়মাস আগে সে রাজমিস্ত্রির কাজে হায়দরাবাদে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানেই তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। শনিবার মৃতের পরিবার সহ বাসিন্দাদের একাংশ প্রতিবেশী এক গৃহবধূর বাড়িতে চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে। ওই বধূ যুবককে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। তবে পুলিস জানিয়েছে, শনিবার বিকেলের ঘটনায় থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দেড়মাস আগে গ্রামের অন্যান্যদের সঙ্গে গোলাম নবী রাজমিস্ত্রির কাজ করতে হায়দরাবাদে গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে সেখানকার একটি জঙ্গলের গাছে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিস মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়।
শুক্রবার সকালে মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছতেই গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। শনিবার মৃতের মোবাইলে প্রতিবেশী ওই বধূর সঙ্গে তার ছবি পাওয়া যায়। তারপরই গ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। এদিন গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, মৃতের বাড়িতে প্রতিবেশী থেকে গ্রামের কয়েকশো পুরুষ-মহিলা জড়ো হয়েছেন। তাঁদের অনেকেই ওই বধূর বাড়িতে চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেন। হুমকি দেওয়া হয়। বধূর পরিবারের লোকজনকে ধাক্কাধাক্কি করা হয়। এক প্রৌঢ়া বলেন, এর আগেও এই বাড়ির মহিলাদের জন্য পাড়ার আরও এক যুবক আত্মহত্যা করেছিল। এর একটা বিহিত হওয়া দরকার।
মৃতের মা সোনা বিবি বলেন, ছেলের সঙ্গে পাড়ার এক বধূর সম্পর্ক ছিল। কিন্তু, সেকথা ছেলে আমাদের জানায়নি। তবে ওর মোবাইলে পাওয়া ছবি দেখে আমাদের কাছে সব পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। মৃত্যুর আগে ছেলের মোবাইলে ফোনও করেছিল ওই বধূ। ছেলের মৃত্যুতে ও প্ররোচনা দিয়েছে। ব্ল্যাকমেল করার কারণে ছেলে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়। ছেলের মৃতদেহ এখনও আসেনি। এভাবে ছেলেকে হারাতে হবে ভাবতেই পারছি না।
মৃতের বাবা মিন্টু শেখ বলেন, আমার চার মেয়ে ও একমাত্র ছেলে ছিল গোলাম নবী। ও খুব পরিশ্রমী ছিল। কোনও কারণ ছাড়া কেউ আত্মহত্যা করতে পারে না। আমরা চাই, পুলিস তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক। মৃতের মামা দুলাল শেখ বলেন, প্রতিবেশী বধূ ব্ল্যাকমেল করার কারণেই ভাগ্নে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। আমরা চাই, পুলিস উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক। যদিও ওই বধূর পরিবারের এক সদস্য বলেন, অভিযোগ করলেই তা সত্যি হয়ে যায় না। আমরাও চাই, পুলিস তদন্ত করে আসল কারণ খুঁজে বের করুক। তবে অকারণে বাড়িতে হামলা বন্ধ হোক।