• সিপিএমে ‘বিরক্ত’ জনতা, ‘লেফট স্ট্রিম’ নামে প্রচারে ছাত্র-যুবরা
    বর্তমান | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সোহম কর, কলকাতা: দেড় দশক আগে যারা রাজ্যের শাসক ছিল, এখন একের পর এক নির্বাচনে তারা স্রেফ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার ‘লড়াই’ করে। তারপরও ‘শূন্য’ তকমা ঘোচাতে পারছে না সেদিনের দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম। এই অবস্থায় তারা কি ‘সিপিএম’ নামটাই দূরে রাখতে চাইছে? এই প্রশ্ন উঠছে কারণ, দলের ছাত্রযুবদের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচির কোথাও সিপিএমের নামই নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘অফিসিয়াল হ্যান্ডেল’ খোলা থেকে শুরু করে প্রচার-কর্মসূচি সফল করার আহ্বান—সবটাই করছে ‘লেফট স্ট্রিম’! প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিধানসভা কেন্দ্র যাদবপুরে ঘটছে এই ঘটনা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বড় বামদলটি হয়তো মনে করছে, সিপিএম নাম শুনলেই মানুষ এখন ‘বিরক্ত’ হয়। তাই নয়া প্ল্যাটফর্ম তৈরির এমন চেষ্টা। সম্প্রতি সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বামফ্রন্টের নাম বদলের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। সেই প্রক্রিয়াই কি ধাপে ধাপে শুরু হল? বাম শিবিরে ঘুরছে এই প্রশ্নও। দলের দাবি, মানুষের কাছে সহজে পৌঁছতে এই উদ্যোগ। 


    ঘটনা হল, সোশ্যাল মিডিয়াতে ‘লেফট স্ট্রিম’ নামে সদ্য একটি পেজ খোলা হয়েছে। সেখানে লেখা রয়েছে, ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের যাদবপুর ১ এরিয়া কমিটির বাম সংগঠনগুলির ‘অফিসিয়াল মিডিয়া হ্যান্ডেল’ এটি। ১৬ ফেব্রুয়ারি যাদবপুরে রক্তদান, দেহদানের অঙ্গীকার, স্বাস্থ্য শিবির আয়োজন করেছে তারা। এখানেই প্রশ্ন, তাহলে কি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছতে ‘সিপিএম’ নামটি আর যথেষ্ট নয়? দলের যাদবপুর ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক অঞ্জন চক্রবর্তী বলছেন, ‘ছাত্র-যুবরা অনেকগুলো নাম দিয়েছিল। সেখান থেকেই পছন্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্য কোনও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নেই।’ বামফ্রন্টভুক্ত দল ছাড়া অন্য কোনও বামদলের গণসংগঠন কি রয়েছে? তাই কি ‘লেফট স্ট্রিম’? এক নেতার কথায়, ‘সেরকম ব্যাপার নেই। মূলত সিপিএমের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংগঠনগুলিই রয়েছে।’ বিষয়টি নিয়ে জলঘোলার কোনও কারণ দেখছে না বাম নেতৃত্ব। সিপিএমের  রাজ্য কমিটির এক নেতার কথায়, ‘এরিয়া কমিটি ওই পেজ খোলেনি। ছাত্র-যুবরা করেছে বিকল্প ভাবনাচিন্তা মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য। মানুষ সহজেই বুঝতে পারবে, এটা কারা করছে।’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘এরিয়া কমিটির নামে ফেসবুক পেজ খোলার অনুমতি থাকে না। জেলা পর্যন্ত অনুমতি দেওয়া হয়। এটা আসলে বিকল্প নাম ব্যবহার করে যত বেশি সংখ্যক সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা।’ সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য প্রতীকউর রহমানের ব্যাখ্যা, ‘আমরা জনগণকে কী ধরনের বিকল্প দিতে চাইছি, সেটা তো আমাদের বলতে হবে।’  তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘আরএসএস কেন বিজেপির নামে সব করে? আমরা তো বিভিন্ন ক্ষেত্রে দলের নামই ব্যবহার করি। সিপিএম নামে মানুষের বিরক্তি, এটা ঠিক নয়।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)