• প্রাথমিকে নিয়োগ: দিব্যেন্দুর লিগাল নোটিশ, জগন্নাথের ফেসবুক পোস্ট ডিলিট..., জলঘোলা পদ্মে
    এই সময় | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার চার্জশিটের সঙ্গে যে সব নথি আদালতে জমা দিয়েছে সিবিআই, তাতে মমতাবালা ঠাকুর, ভারতী ঘোষের সঙ্গে নাম রয়েছে তমলুকের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর। তাঁরা কয়েকজনের নাম প্রাথমিকের শিক্ষক পদে সুপারিশ করেছিলেন বলে দাবি সিবিআই সূত্রের।

    সেই সংক্রান্ত নথি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দিব্যেন্দুর আইনি নোটিসের মুখে পড়লেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। এই আইনি নোটিসের পর দিব্যেন্দুকে নিয়ে জগন্নাথের বিতর্কিত পোস্ট উধাও হয়েছে।

    সিবিআইয়ের জমা দেওয়া নথির একাংশ শুক্রবারই সামনে এসেছে। সেই নথি থেকে সংশ্লিষ্টদের নামের তালিকার একটি গ্র্যাফিক্স জগন্নাথ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন। সেই পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এসএসসি নিয়োগ। যোগ্যরা রাস্তায়, অযোগ্যরা সুপারিশে। সেটিং সেটিং বলে যাঁরা চিৎকার করেন, তাঁরাই বলুন। ২০১৬ সাল। সকলেই তৃণমূলী সম্পদ। কেউ ছাড় পাবেন না। সময় লাগতে পারে।’

    দিব্যেন্দু ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগদান করেন। তাঁর দাদা শুভেন্দু অধিকারী বিধানসভার বিরোধী দলনেতা এবং বঙ্গ–বিজেপির অন্যতম প্রধান মুখ। জগন্নাথের এই পোস্ট ঘিরে স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপির অন্দরে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। জগন্নাথের এই পোস্ট নিয়েই আইনি নোটিস পাঠান দিব্যেন্দু।

    সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘এই নোটিস পাওয়ার দু’ঘণ্টার মধ্যে যদি পোস্ট ডিলিট না–করা হয়, তা হলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’ জগন্নাথ অবশ্য এই পোস্ট ইতিমধ্যে ডিলিট করেছে‍ন। তমলুকের প্রাক্তন সাংসদের আইনি চিঠির উত্তরও জগন্নাথ দিয়েছেন বলে দিব্যেন্দু শনিবার জানিয়েছেন। জগন্নাথের সেই উত্তর নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

    দিব্যেন্দুর বক্তব্য, ‘সেই উত্তরে পোস্ট ডিলিট করা হয়েছে বলা হলেও এই পোস্ট উপর মহলের নির্দেশে করা হয়েছিল বলে উনি আমার আইনজীবীকে জানিয়েছেন।’ যদিও এই বিষয়ে জগন্নাথ শনিবার কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

    প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, উপর মহল বলতে কার কথা বোঝাতে চেয়েছেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক? দিব্যেন্দু বিজেপির সক্রিয় নেতা। অন্য পাঁচজনের সঙ্গে তাঁর নাম রেখে এমন পোস্ট করার নির্দেশ কে দিলেন? এই বিতর্কে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য শনিবার কোনও মন্তব্য করতে চাননি। এই বিষয়টি সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল নন বলেও শমীক জানিয়েছেন।

    রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার শনিবার সার্বিক ভাবে এসএসসি বিতর্কে বিজেপি নেতাদের নাম আসা নিয়ে বলেন, ‘মানুষ জলের মতো। তাকে যে পাত্রে রাখবেন, সেই পাত্রের আকার ধারণ করবে। নেতাও তো মানুষ। তৃণমূলে থাকলে তৃণমূলের পলিসি অনুযায়ী কাজ করতে হবে!’

    দিব্যেন্দু এ দিন জগন্নাথকে যে আইনি চিঠি পাঠিয়েছেন, সেখানে তাঁর আইনজীবী বলেছেন, ‘কলকাতা হাইকোর্টের নজরদারিতে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির তদন্ত সিবিআই করছে। এই তদন্ত পর্বে সিবিআই কখনও আমার মক্কেলকে (দিব্যেন্দু) সমন করেনি। আমার মক্কেলের সঙ্গে এই দুর্নীতির যোগাযোগ রয়েছে, এমন কথা চার্জশিটেও বলা হয়নি। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে পরিকল্পিত ভাবে আপনি আমার মক্কলের চরিত্রহনন করতে অসমর্থিত খবরকে ভিত্তি করেছেন।’ জগন্নাথ পোস্ট ডিলিট করে দিলেও এ নিয়ে দলের অন্দরে জলঘোলা হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে বিজেপির একাংশের বক্তব্য।

  • Link to this news (এই সময়)