• কম খরচে লেজ়ার সার্জারি শ্রীরামপুর শ্রমজীবীতে, প্রথম দিনেই সফল
    এই সময় | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, শ্রীরামপুর: শহরাঞ্চলের পর গ্রামীণ এলাকায় গণ উদ্যোগে গড়ে ওঠা শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালেও শুরু হল লেজ়ার সার্জারি।

    চিকিৎসা বিজ্ঞানে লেজ়ার সার্জারি যন্ত্রণা ও রক্তপাতহীন বলে জানিয়েছেন শল্য চিকিৎসকেরা। ফিসার, ফিসচুলা ও হেমারয়েড–সহ মলদ্বারের বিভিন্ন অস্ত্রোপচারে এই পদ্ধতির ব্যবহার হতে পারে। এ ছাড়া ঝুঁকিহীন অস্ত্রোপচারের ফলে রুগীকে বেশি দিন বাড়িতে বসেও কাটাতে হবে না। দ্রুত কাজে যোগ দিতে পারবেন তাঁরা। অস্ত্রোপচারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রোগী হেঁটে বাড়ি ফিরতে পারবেন। এতে লাভবান হবেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ।

    শুক্রবার শ্রীরামপুর উত্তরপাড়া ব্লকের শ্রীরামপুর বেলু মিল্কিতে শ্রমজীবী হাসপাতালে নতুন পরিষেবার সূচনায় গ্রাম ও শহরের বাসিন্দারা লেজ়ার সার্জারি করিয়েছেন। নতুন পরিষেবা সূচনার দিনেই মানসী ধাড়া, মামনি মাঝি ও পল্লব কুণ্ডুর মতো মধ্যবয়সী তিন রোগীর লেজ়ার সার্জারি হয়।মলদ্বারের জটিল ও কঠিন অসুখ নিয়ে তিন রোগীই খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন। সার্জারির পর তিন জনই সুস্থ আছেন বলে শ্রমজীবী হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।

    সদ্য লেজ়ার সার্জারি করানোর পরে রোগীর আত্মীয়েরা বলেন, ‘শহরের নামী–দামি নার্সিংহোমগুলিতে বিপুল খরচের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু আমরা দিনআনা–দিনখাওয়া পরিবার। শ্রমজীবী স্বাস্থ্য প্রকল্পের অধীন শ্রীরামপুর শ্রমজীবীতে যোগাযোগ করি। তারপর বহির্বিভাগে দেখানোর পর চিকিৎসক মলদ্বারে লেজ়ার সার্জারির প্রস্তাব দেন। আমরা বাইরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই সার্জারির খরচ জানতে চেয়েছিলাম। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ লক্ষাধিক টাকা লাগবে বলে জানিয়ে দেন। কিন্তু শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালে মাত্র ১১ হাজার টাকাতেই ওই অপারেশন হয়েছে।’

    চন্দননগর থেকে আসা পল্লব কুণ্ডু বলেন, ‘আমি খুব খুশি। ভাবিনি, এত কম সময়ে, এত কম খরচে অপারেশন হবে।’

    শ্রমজীবী হাসপাতালের সহসভাপতি ফণীগোপাল ভট্টাচার্য বলেন, 'গ্রামীণ মানুষের কাছে উন্নত পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া আমাদর অন্যতম লক্ষ্য'। শ্রমজীবী হাসপাতালের সহ সম্পাদক গৌতম সরকার বলেন, ‘উন্নত প্রযুক্তির চিকিৎসা শ্রমজীবী মানুষের জন্যে জরুরি, তাতে একদিকে যেমন হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় কমে, তেমনই দ্রুত রোজগারে ফিরতে পারেন তাঁরা।’ স্বাস্থ্যকর্মী সব্যসাচী রায় বলেন, ‘এই অপারেশন রুগী, চিকিৎসক উভয়ের জন্যই সুবিধাজনক। রক্তক্ষরণ হয় না, সময় অনেক কম লাগে।’

    ১৯৯৮ সাল থেকেই শ্রমজীবী হাসপাতালে ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি শুরু হয়, যাতে পেটে তিনটি মাত্র ছিদ্র করে গলব্লাডার, অ্যাপেন্ডিসাইটিস ও হার্নিয়ার মতো জটিল অপারেশন বিনা রক্তপাতেই করা সম্ভব হয়। সি আর্ম যন্ত্রের সাহায্যে অর্থোপেডিক অপারেশনও দক্ষতার সঙ্গে করা হয় এখানে।

  • Link to this news (এই সময়)