• চালকের ঘুম তাড়াতে সেফটি ডিভাইসের পরামর্শ পুলিশের
    এই সময় | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • রূপক মজুমদার, বর্ধমান

    ফের জাতীয় সড়কে বাস দুর্ঘটনা। আর সেই দুর্ঘটনার পিছনে একটি কারণ হিসেবে উঠে আসছে চালকদের ঘুমিয়ে পড়া। অত্যধিক ক্লান্তি যার নেপথ্যে বলে মনে করছে পুলিশ।

    পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের দাবি, চালকের ঘুমিয়ে পড়ার কারণে সাম্প্রতিক অতীতে জেলায় পাঁচটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে আউশগ্রাম থানা এলাকায় মৃত্যু হয়েছে এক চালকের। জেলার খণ্ডঘোষেও এই নজির রয়েছে। সেখানে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন খোদ থানার ওসির গাড়িচালক। ওই গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে ওসি–সহ চার জন গুরুতর আহত হন। দীর্ঘদিন হাসপাতালে কাটাতে হয় তাঁদের।

    জেলা পুলিশের দাবি, দুর্ঘটনা এড়াতে বিশেষ সেফটি ডিভাইস ব্যবহার করে ফল পাওয়া গিয়েছে। ভিনরাজ্য থেকে অপরাধীদের পাকড়াও করে আনতে জেলা পুলিশের আধিকারিকদের দিল্লি, মুম্বই, বিহার ছুটতে হয়। দীর্ঘ পথে যাতে ক্লান্ত হয়ে চালক ঘুমিয়ে না পড়েন তার জন্য ওই গাড়িগুলিতে বসানো হয়েছে বিশেষ প্রযুক্তির সেন্সর।

    সেই সেন্সরযুক্ত ডিভাইস যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়িতে বসানোর জন্য রোড-সেফটি মিটিংয়ে আবেদন করছে পুলিশ, আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তর। কিন্তু, সেই আবেদনে কাজ হচ্ছে না বলে হতাশা প্রকাশ করে জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ‘গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট নিতে আসার সময়ে গাড়িচালকদের আমরা এই ডিভাইসের কথা বার বার বলছি। কিন্তু কেউ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আইনগত ভাবে আমরাও কাউকে বাধ্য করতে পারি না। বিষয়টি আমরা রাজ্য পরিবহণ দপ্তরেও পাঠিয়েছি। এখন সিদ্ধান্ত তাঁরা নেবেন।’

    দুর্ঘটনা এড়াতে এমন সেন্সর খুবই ফলপ্রসূ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই ডিভাইসের দাম খুব বেশি নয়। ৫০-৬০ হাজার টাকার মধ্যেই হয়ে যায়।’ কেন ব্যবহার করা যাচ্ছে না এই সেন্সর? বর্ধমানের এক পরিবহণ ব্যবসায়ী লালপ্রসাদ সিং বলেন, ‘যে ভাবে গাড়ির টায়ার থেকে বিভিন্ন যন্ত্রাংশের দাম, মেনটেন্যান্স খরচ বেড়েছে, তার সঙ্গে রয়েছে চালক, খালাসির বেতন, তাতে এই বাড়তি ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব নয়।’

    কী ভাবে কাজ করে ওই ডিভাইস? চালকের আসনের সামনে থাকা এই ডিভাইসে রয়েছে একটি সেন্সর। চালকের চোখের পাতা তিন সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হলেই সেন্সর সঙ্কেত পাঠাবে আর মুহূর্তে বেজে উঠবে গাড়িতে থাকা অ্যালার্ম। ফলে সতর্ক হয়ে যাবেন চালক।

    সেন্সর প্রস্তুতকারক একটি সংস্থার আধিকারিক পঙ্কজ শর্মা বলেন, ‘গাড়ির গতিবেগ ২০ কিমি–এর উপর থাকলেই জিপিআরএস পদ্ধতিতে এটি অ্যাক্টিভ হয়ে যাবে। অ্যালার্মের সাউন্ডে ঘুম ভাঙতে বাধ্য। তা ছাড়া কেউ যদি সেন্সর ঢেকেও দেয় তা হলেও অ্যালার্ম বেজে উঠবে।’ বিষয়টি শুনে জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, ‘খুবই ভালো টেকনোলজি। পরবর্তী রোড সেফটি বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা করব।’

  • Link to this news (এই সময়)