• স্কুলে শৌচাগার দুর্নীতি-কাণ্ডে দ্রুত শুনানি শেষ করতে চায় পুরসভা
    আনন্দবাজার | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • শৌচাগার দুর্নীতি-কাণ্ডে চার্জশিট পেশ করে শুনানি শুরু হয়েছে মাস চারেক আগে। সূত্রের খবর, এই শুনানি প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে চায় কলকাতা পুরসভা। দুর্নীতি-কাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ উঠে এসেছিল, শুনানি প্রক্রিয়ায় তার প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে বলে পুরসভার পার্সোনেল বিভাগ সূত্রের খবর। কলকাতা পুরসভার এক আধিকারিক সম্প্রতি বলেন, ‘‘বিভিন্ন পুর বিদ্যালয়ে শৌচাগার সংস্কারের নামে প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকার গরমিলের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে আগেই। শুনানি প্রক্রিয়া চলা মানে অভিযুক্তদেরও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া। এখনও শুনানি শেষ হয়নি। তবে পুর বিদ্যালয়ে শৌচাগার সংস্কারের নামে যে দুর্নীতি হয়েছে, তা পরিষ্কার।’’

    প্রসঙ্গত, ২০১৭-২০২০ সালের মধ্যে পুরসভা পরিচালিত ৫০টি বিদ্যালয়ে শৌচাগার সংস্কারের নামে প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকার গরমিলের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। পুরসভার শিক্ষা বিভাগ আগেই তদানীন্তন বিভাগীয় চিফ ম্যানেজার, তদানীন্তন ম্যানেজার, এক পুর আধিকারিক এবং এক কর্মীকে কারণ দর্শাতে বলেছিল। তাঁরা সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় পুরসভা ওই চার জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়ে শুনানি প্রক্রিয়া শুরু করে। পুরসভার ‘ডিসিপ্লিনারি প্রসিডিংস সেল’-এ শুনানি শুরু হয়েছে গত নভেম্বর থেকে। শৌচাগার দুর্নীতির বিষয়টি বছর দুয়েক আগে প্রকাশ্যে আসে। এর পরে অভিযুক্ত এক মহিলা আধিকারিক বছর দেড়েক আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইমেল পাঠিয়ে অভিযোগ করেছিলেন যে, শুধুমাত্র মুসলিম মহিলা আধিকারিক বলেই তিনি চরম হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। যার জবাবে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, ‘‘ধর্মের দোহাই দিয়ে কেউ পার পাবেন না। দুর্নীতির সঙ্গে কখনও আপস করব না। দুর্নীতি করলে শাস্তি পেতেই হবে।’’

    পুরসভা সূত্রের খবর, বছর সাতেক আগে একাধিক পুর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরা শৌচাগার-দুর্নীতির বিষয়টি পুরসভার শিক্ষা বিভাগের পদস্থ কর্তাদের বিশদে জানিয়েছিলেন। অভিযোগ, ৫০টি পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার সংস্কার না করেই খাতায়কলমে কাজ করা হয়েছে দেখিয়ে ঠিকাদারদের মোটা টাকার বিল ধরানো হয়েছিল। ওই সমস্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ ছিল, খরচের বিলে তাঁদের দিয়ে জোর করে সই করিয়ে ঠিকাদারদের টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

    বাম প্রভাবিত ‘কলকাতা পৌর শিক্ষক ও কর্মী সঙ্ঘ’-এর সাধারণ সম্পাদক অশোককুমার চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘শৌচাগার সংস্কারের নামে রীতিমতো পুকুর চুরি হয়েছিল। আমরা তদানীন্তন যুগ্ম পুর কমিশনারকে (শিক্ষা) একাধিক বার বিষয়টি জানালেও কোনও কাজ হয়নি।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)