নয়াদিল্লির মতোই উদ্বেগের ছবি দেখা গেল রবিবার সন্ধ্যায় আসানসোল রেল স্টেশনের বাইরে। প্রয়াগরাজগামী ট্রেন আসানসোলে আসার আগে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা যায় আসানসোল স্টেশন চত্বরে। কার্যত একে অপরের ঘাড়ে উঠে পড়েন। হুড়োহুড়ি শুরু করেন রেলযাত্রীরা। কাতারে কাতারে পুণ্যার্থী স্টেশন চত্বরে হাজির হন। দড়ি দিয়ে সেই ভিড় নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে রেল। তবে সাধারণ মানুষই প্রশ্ন তুলছেন, এত মানুষের ভিড় কি আদৌ পুজো প্যান্ডালের ভিড়ের মতো দড়ি গিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়? যে কোনও মুহূর্তে বড় বিপদ ঘটে যাওয়ার ঝুঁকি কি থেকেই যাচ্ছে না?
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আসানসোল স্টেশন থেকে কুম্ভগামী স্পেশাল ট্রেন ছাড়ছে, আসানসোল মুম্বই স্পেশাল ভায়া প্রয়াগরাজ। সেই ট্রেন ধরতে দুপুর থেকেই স্টেশন চত্বরে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ট্রেনের সময় যত এগিয়ে আসে, উদ্বেগ বাড়তে থাকে যাত্রীদের। একটা ট্রেন, অথচ হাজার হাজার যাত্রী। লক্ষ্য সকলের এক, ট্রেনে উঠতেই হবে, মহাকুম্ভে পৌঁছতেই হবে।
২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ট্রেন ঢুকে যায়। কুম্ভযাত্রীদের একাংশের দাবি, অসংরক্ষিত কামরার যাত্রী যারা, তাদের স্টেশনের বাইরে প্রথম থেকেই ব্যারিকেডের মধ্যে রাখা হয়। এ দিকে ট্রেনের ঘোষণা হতেই যাত্রীরা প্ল্যাটফর্মে ঢুকতে উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। এমনকী যাঁরা চেয়ারে বসেছিলেন, সেই চেয়ার মাথায় তুলে নিয়েই ছুটতে থাকেন। হুড়োহুড়ি পড়ে যায় স্টেশন চত্বরে।
যদিও রেলের পুলিশ মাইকে ঘোষণা করতে থাকে, প্রথম লাইনে যারা ছিল, তাদের আগে ছাড়া হয়েছে। এর পর ধীরে ধীরে সকলকেই ছাড়া হবে। তবে প্ল্যাটফর্মের ভিতরের ছবিটি আবার একেবারেই সুশৃঙ্খল। রেল পুলিশের উদ্যোগে লাইন দিয়ে একে একে যাত্রীদের ট্রেনে তোলা হয়। ট্রেনে উঠে রেল পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সন্তোষও প্রকাশ করেন যাত্রীদের কেউ কেউ।
এ দিন সকালেই স্টেশনে গিয়েছিলেন আসানসোলের ডিআরএম চেতনানন্দ সিং। তিনি স্পষ্ট জানান, অনেক ট্রেন আছে। কারও চিন্তিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। একটি ট্রেনে জায়গা না পেলে বার বার ঘোষণা করা হবে, ২-৩ ঘণ্টায় আর কোন কোনও ট্রেন আছে। তিনি অনুরোধও করেন, কোনও ট্রেনে খুব ভিড় হলে তাতে যেন না ওঠেন। সকলেই যেতে পারবেন। কিন্তু ডিআরএমের আশ্বাসের পরও যে, যাত্রীদের উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি, রবিবারের সন্ধ্যার ছবিটা তা দেখিয়ে দিল।