পর পর জ্বলছে গাড়ি। ফাটছে টায়ার, ইঞ্জিনের সিলিন্ডার। প্রবল হাওয়ায় আগুনের শিখা বাঁক নিচ্ছে। শনিবার সকালে অগ্নিকাণ্ডে এমনই পরিস্থিতি তৈরি হল ই এম বাইপাস লাগোয়া আরুপোতা এলাকায়। খবর পেয়ে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তত ক্ষণে অবশ্য অন্তত ১০টি গাড়ি এবং চারটি ঘর পুড়ে গিয়েছে। তবে এই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল দশটা নাগাদ আরুপোতা এলাকার একটি গ্যারাজ থেকে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখেন প্রতিবেশীরা। দ্রুত দমকলে খবর দেন তাঁরা। খবর যায় স্থানীয় প্রগতি ময়দান থানায়। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে যায় দমকলের তিনটি ইঞ্জিন। প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত পর্যন্ত সেখানে একটি দমকলের গাড়ি রেখে জায়গাটি ঠান্ডা করার কাজ চলে।
এ দিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা গেল, আশপাশে একের পর এক গ্যারাজ তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে যে গ্যারাজে এ দিন আগুন লাগে, সেটির টালির চাল আর অবশিষ্ট নেই। ভেঙে পড়েছে টিনের দেওয়ালও। সেখানে পর পর দাঁড় করানো রয়েছে গাড়ির কঙ্কাল। রহমত হোসেন নামে এক যুবক সেখানেই দাবি করেন, গ্যারাজ থেকে আগুন লেগে পাশের টাইলসের কারখানা ও দু’টি ঘরের পাশাপাশি গরু, মোষ রাখার একটি ঘরেও আগুন ধরেছিল। এমন হাওয়া বইছিল যে, দমকলের গাড়ি দ্রুত না এলে আরও কয়েকটি ঘরে আগুন ধরে যেতে পারত।
ভস্মীভূত একটি ঘরে ঢুকে দেখা গেল, থালা-বাসন, স্টোভ জ্বলে গিয়েছে। তন্ময় সাহা নামে এক যুবক বলেন, ‘‘আমরা টাইলসের কারখানায় কাজ করি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের ঘরে আগুন ধরে যায়। সব ফেলে ছুটে পালিয়েছি।’’ এ সবের মধ্যেই কয়েকটি গরু ও মোষকে বার করে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন বৃদ্ধ নিমাই ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এখানে আগেও এমন হয়েছে। গ্যারাজ চালানো হয়, কিন্তু আগুন নেভানোর কোনও ব্যবস্থা রাখা হয় না।’’ গ্যারাজটিতে কোনও অগ্নি-নির্বাপক ছিল না বলে জানাচ্ছে দমকলও।
উপস্থিত এক দমকলকর্তার দাবি, ‘‘কী থেকে আগুন লেগেছে, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে অনুমান, গ্যারাজে শর্ট সার্কিট হওয়ায় আগুন লেগেছে। পুলিশও তদন্ত করছে।’’ গ্যারাজের মালিক মহম্মদ আমন অগ্নি-নির্বাপক ছিল বলে দাবি করেন। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘গাড়িগুলো সব পুড়ে গিয়েছে। কী ভাবে সামাল দেব, জানি না। বিমার টাকা না পেলে সমস্যায় পড়ব।’’