জটিলতা দেখা দিয়েছিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবতের সভা নিয়ে। হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে সেই জটিলতা কাটিয়ে, রবিবার পূর্ব বর্ধমানে তালিত সাই কমপ্লেক্স মাঠে প্রকাশ্য সভা করলেন আরএসএস প্রধান। সেই সভা থেকেই হিন্দুত্বর পাঠ শেখালেন তিনি। একই সঙ্গে কারা হিন্দু সেই কথার ব্যাখ্যাও দিলেন আরএসএস প্রধান। হিন্দু সমাজ এবং ভারতবর্ষ একই সেই কথাও ওই সভা থেকে বলেন তিনি। তাঁর মতে, অন্যদের তুলনায় হিন্দুদের দায়িত্বজ্ঞান অনেক বেশি। সেই কারণেই অনেক বিবিধতার মধ্যে একতা আছে এবং সেটাই ভারতের বৈশিষ্ট্য।
সব বাধা দূর করে হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাকও দিয়েছেন আরএসএস প্রধান। ওই সভায় তিনি বোঝান ‘ভারত মাহাত্ম্য’-র কথাও। তিনি বলেন, ‘ভারত পৃথিবীর ইতিহাসে প্রাচীন একটা দেশ। এই দেশ ব্রিটিশদের তৈরি দেশ নয়। ইংরেজ আসার আগে ভারত একটা দেশ ছিল। সেখানে ছিল হিন্দু সংস্কৃতি। ভারতে বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ থাকলেও একতা আছে । মনে রাখতে হবে ভারতবর্ষ একটাই। হিন্দুসমাজ এবং ভারত একই রূপ। হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করতে হবে। তবে ছোট খাটো সমস্যা থাকবেই । সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা কতটা তৈরি সেটা দেখতে হবে। তাই বর্তমানে ভারতবর্ষের হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করতে হবে, একত্রিত করতে হবে।’
কেন আরএসএস হিন্দু সমাজের ওপর মনোনিবেশ করে সেই কথার ব্যাখ্যাও রবিবারের সভা থেকে দিয়েছেন মোহন ভাগবত। তাঁর মতে, হিন্দু সমাজ সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীল। অন্যদের তুলনায় হিন্দুদের দায়িত্বজ্ঞান অনেক বেশি। সেই কারণেই হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে চায় আরএসএস।
মোহন ভগবতের কথার পুরোটা জুড়েই ছিল ভারত তথা ভারতীয় ও হিন্দু জাতির অভিযোজন ও অধ্যয়ন নিয়ে। আর সেই কথা বলতে গিয়ে বারবার ইতিহাসকে আঁকড়ে ধরেছেন মোহন ভগবত। ভারতের মূল বৈশিষ্ট কী সেই কথাও উল্লেখ করেন তিনি। আরএসএস প্রধান বলেন, ‘ এখানে বসবাসকারী সকলেরই স্বভাব হচ্ছে, বিশ্বের বিবিধতাকে স্বীকার করে চলা। হিন্দু জানে, সত্য একটাই। সবার নিজের নিজের বিশিষ্টতা রয়েছে, হিন্দু জানে এই বিশিষ্টতা কী। বিবিধতার মধ্যে একতা হচ্ছে ভারতে বৈশিষ্ট্য। একতাই দেশের বৈশিষ্ট্য। হিন্দু সমাজ ভারতীয় সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য। সারাদেশে বিবিধতাকে এক সূত্রের মধ্যে নিয়ে চলার চেষ্টা করছে হিন্দু সমাজ।’
উল্লেখ্য, আগামী বছরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। আর এখন ১০ দিনের জন্য রাজ্য সফরে এসেছেন আরএসএস প্রধান। তাঁর এই সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে করছে রাজনৈতিক মহল।