সংবাদদাতা, মানিকচক: মাদক কারবারিদের বিরোধিতা করে তাদের রোষের মুখে পড়লেন এনায়েতপুর অঞ্চল তৃণমূল সহ-সভাপতি মহম্মদ তাফাজ্জল হোসেন। রাতের অন্ধকারে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বাড়িতে রাখা তাঁর চারচাকা। স্থানীয়দের তৎপরতায় অল্পের জন্য রক্ষা পান তৃণমূল নেতা সহ পরিবারের সদস্যরা। তাফাজ্জলের কথায়, মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্যই কারবারীদের আক্রোশের মুখে পড়তে হয়েছে আমাকে।
শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মানিকচক থানার শেখপুরা গ্রামে। লিখিত অভিযোগ পেয়ে মানিকচক থানার পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। শেখপুরার বাসিন্দা তাফাজ্জল শনিবার গভীর রাতে বাড়িতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলেন। সেই সময় বিকট শব্দ শুনে তাফাজ্জল ঘরের বাইরে বেরিয়ে দেখেন দাউ দাউ করে জ্বলছে তাঁর চারচাকা। এমন ঘটনা দেখে তিনি চিত্কার শুরু করলে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের তৎপরতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ততক্ষণে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় গাড়িটি। এছাড়া বাড়ির কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এলাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত তাফাজ্জলের বাড়িতে এমন ঘটনায় আতঙ্ক বেড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও। রবিবার সকালে ঘটনাস্থলে আসে মানিকচক থানার পুলিস। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িটি খতিয়ে দেখে আধিকারিক কথা বলেন তৃণমূল নেতার সঙ্গেও। বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় ঘটনার সময় কয়েকজন যাওয়া আসা করছে। তারা কারা, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। তবে পুলিসের সামনেই মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেতা। এবিষয়ে তাফাজ্জল বলেন, কয়েক মাস আগে মাদক কারবারিদের রমরমা ছিল এলাকায়। তাদের বাড়বাড়ন্ত ও বেপরোয়া কারবার রুখতে পুলিস, ব্লক প্রশাসন, বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেছিলাম। এমনকি দিদিকে বলোতেও জানিয়েছিলাম। বর্তমানে এলাকায় মাদকের কারবার কমেছে বলে ক্ষতির মুখে পড়েছে কারবারিরা। সেই আক্রোশে আমার গাড়ির পিছনের কাচ ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি খুব আতঙ্কে আছি। পরবর্তীতেও আমার উপর এই ধরনের হামলা হতে পারে।
এবিষয়ে বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলেন, বিষয়টি শুনেছি। কারা এমন কাজ করেছে জানি না। তবে মাদক কারবারীরা যদি সত্যিই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হয়, তবে বিষয়টি খুব উদ্বেগজনক। পুলিস বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
মানিকচক থানার এক পুলিস আধিকারিক জানিয়েছেন, অভিযোগকারীর বাড়ি থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ উদ্ধার করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একটি লিখিত অভিযোগ হয়েছে। সেই ভিত্তিতে তদন্ত করে জড়িতদের ধরার চেষ্টা চলছে। দ্রুত আসল ঘটনা সামনে আসবে। নিজস্ব চিত্র।