বিদ্যুৎ বিভ্রাটে স্তব্ধ মেট্রো সচল করবে ‘পাওয়ার ব্যাঙ্ক’, দেশে প্রথম বসছে কবি সুভাষ-দক্ষিণেশ্বর রুটে
বর্তমান | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কথা বলতে বলতে হঠাৎ মোবাইলের চার্জ শেষ। বন্ধ হয়ে গেল ফোন। পথেঘাটে এমন অভিজ্ঞতা অনেকেরই হয়। লোডশেডিং থাকলে বিড়ম্বনা বাড়ে কয়েকগুন। কখন বিদ্যুৎ আসবে, তার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়। এই সমস্যা থেকে মোবাইল ব্যবহারকারীদের মুক্তি দিতে বাজারে এসেছে ‘পাওয়ার ব্যাঙ্ক’। অনেকেই এখন প্রয়োজনীয় সামগ্রীর সঙ্গে ‘পাওয়ার ব্যাঙ্ক’ সঙ্গে নিয়ে ঘোরেন। পথেঘাটে চার্জ ফুরিয়ে ফোন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় আর থাকে না।
একইভাবে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে মাঝমধ্যেই স্তব্ধ হয়ে যায় কলকাতা মেট্রো। থার্ড লাইনে ‘পাওয়ার ট্রিপ’ কিংবা গ্রিডে সমস্যার কারণে আচমকা দাঁড়িয়ে পড়ে মেট্রো রেক। কাজের দিনের ব্যস্ত সময়ে দুই স্টেশনের মধ্যবর্তী টানেলে ভিড়ে ঠাসা মেট্রোর ক্ষেত্রে এমন ঘটনা বহুবার ঘটেছে। এসব ক্ষেত্রে এমার্জেন্সি দরজা খুলে যাত্রীদের লাইন ধরে কাছের স্টেশনে হেঁটে পৌঁছতে হয়। এই যন্ত্রণা থেকে এবার স্থায়ীভাবে মুক্তি পেতে চলেছেন কলকাতা মেট্রোর যাত্রীরা। মেট্রোর নর্থ-সাউথ রুটে (কবি সুভাষ-দক্ষিণেশ্বর) বসছে ‘পাওয়ার ব্যাঙ্ক’, যা দেশের মধ্যে প্রথম। এর ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটলেও যাত্রীবোঝাই রেক ৩০ কিলোমিটার গতিবেগে ছুটতে সক্ষম হবে। মাঝপথে বিদ্যুৎ সংযোগ কোনও কারণে চলে গেলেও নিকটবর্তী স্টেশনে যাত্রীদের পৌঁছে দিতে সমস্যা হবে না।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মে মাসেই কলকাতার নর্থ-সাউথ মেট্রো রুটে বসে যাবে এই ‘পাওয়ার ব্যাঙ্ক’। সর্বাধিুনিক এই প্রযুক্তির পোশাকি নাম ‘ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম (বিইএসএস), যা ইনভার্টার ও অ্যাডভান্স কেমিস্ট্রি সেল (এসিসি) ব্যাটারির মিশেলে তৈরি। তাইওয়ানের একটি সংস্থা কলকাতা মেট্রোর জন্য ৪ মেগাওয়াটের এই বিইএসএস তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে প্রতি ঘন্টায় ৬.৪ মেগাওয়াটের লিথিয়াম আয়রন ফসফেট ব্যাটারি তৈরি করছে তারা। সম্প্রতি মেট্রো কর্তারা বেসরকারি ওই সংস্থার কারখানায় গিয়ে এই প্রযুক্তির ভালোমন্দ খতিয়ে দেখে এসেছেন। যাবতীয় পরীক্ষা ও পর্যালোচনার পর তাঁরা প্রযুক্তিটি অনুমোদন করেছেন। সূত্রের খবর, মার্চের মাঝামাঝি নাগাদ যন্ত্রটি কলকাতায় চলে আসবে। দমদম থেকে মহানায়ক উত্তমকুমার (টালিগঞ্জ) স্টেশনের মধ্যবর্তী যেকোনও অংশে বসানো হবে বিইএসএস। মাত্র ১০৬ বর্গ মিটার জায়গায় সহজেই বসানো যাবে যন্ত্রটি, যার আয়ু হবে ১৪ বছর। এই প্রযুক্তি কলকাতা মেট্রোর ব্যায় সঙ্কোচে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে বলেও খবর। পরিবেশবান্ধব এই ব্যবস্থায় বছরে প্রায় কোটি টাকার কাছাকাছি খরচ সাশ্রয় হবে বলে জানাচ্ছেন মেট্রো কর্তারা।