নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: হুগলি সাংগঠনিক জেলায় বুথ কমিটি তৈরি করতে গিয়ে নাকানিচোবানি খাচ্ছে বিজেপি। কোথাও সদস্যের অভাবে কমিটি তৈরিই করা যায়নি। কোথাও আবার নাম কা ওয়াস্তে কমিটি তৈরি করে এবং রিপোর্ট দাখিল করে দায় সেরেছে নেতৃত্ব। দলের অন্দরমহলের খবর, হুগলি জেলায় মাত্র ৫০শতাংশ বুথে কমিটি তৈরি করতে পেরেছে গেরুয়া পার্টি। তাও করা হয়েছে কেবলমাত্র দলের সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার মর্যাদা রাখতে। কারণ, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল, মোট বুথের অন্তত ৫০ শতাংশ কমিটি তৈরি না হলে সাংগঠনিক নির্বাচন করা যাবে না। গোটা ঘটনায় দলের বেহাল পরিস্থিতি সামনে এসেছে। সেই সঙ্গে হাঁকডাক করে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের বাস্তবতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
তবে বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব দলের বিবর্ণ দশার কথা মানতে চায়নি। এই সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, ‘বুথ কমিটি গঠন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আমরা ১০০ শতাংশ বুথেই কমিটি গড়ব। আপাতত নির্বাচন প্রক্রিয়ার কারণে ৫০শতাংশ বুথে কমিটি করা হয়েছে।’ তাঁর দাবি, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে হুগলি জেলায় অন্য বিজেপিকে দেখা যাবে। তবে এক দাপুটে বিজেপি নেতার কথায়, ‘বিজেপির সদস্য হয়েছেন, এমন মানুষও কমিটিতে থাকতে চাইছেন না। কেউ কেউ আবার চাপে পড়ে কমিটিতে থাকলেও দলের সাংগঠনিক কর্মসূচিতে থাকতে চাইছেন না। এই অবস্থায় যে ৪৫ বা ৫০ শতাংশ বুথে কমিটি হয়েছে, সেখানেও লাভের লাভ কতটা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অসীমা পাত্র বলেন, ‘গেরুয়া পার্টির উপরে মানুষের আস্থা নেই। নানা ঘটনা বারবার তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। ধর্মের ধ্বজা ধরে উন্নয়নকে অস্বীকার যারা করবে, তাদের এরকম বেহাল দশাই হবে।’ তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অসীমাদেবী হুগলির ধনেখালির বিধায়ক। আর সেই বিধানসভার বুথেই বিজেপি কমিটি তৈরিতে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছে।
সম্প্রতি হইচই করে সদস্য সংগ্রহ অভিযান করেছে বিজেপি। তারপরেই সাংগঠনিক নির্বাচন ও বুথ কমিটি গড়তে নেমেছিল তারা। বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলায় প্রায় ২১০০টি বুথ আছে। তার মধ্যে মাত্র এক হাজার বুথে কমিটি গড়তে পেরেছে তারা। যে হাজারটি কমিটি গড়া হয়েছে, তার মধ্যে অন্তত ২০০টি বুথে মাত্র তিনজনের কমিটি গড়া হয়েছে বলে খবর। ফলে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও দলের এই অবস্থায় হতাশা গোপন করতে পারছেন না বিজেপির নেতাকর্মীদের একটা বড় অংশ।