জীবনতলা কাণ্ডে বেঙ্গল এসটিএফ-এর জালে আরও এক ব্যক্তি। ধৃতের নাম শান্তনু সরকার। তাঁর বাড়ি চম্পাহাটিতে। গত শনিবার রাতে কলকাতার বিবাদী বাগ চত্বরে একটি প্রাচীন বন্দুকের দোকানে যৌথ ভাবে হানা দেয় কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ। বেঙ্গল এসটিএফের দাবি করেছিল, এই দোকানটির স্টক রেজিস্টারে উল্লেখ থাকা কার্তুজের সংখ্যার সঙ্গে বাস্তবে থাকা কার্তুজের স্টকের হিসাব মিলছে না। এই ঘটনায় আগেই এই দোকানের কর্মী, নদিয়ার শান্তিপুরের বাসিন্দা জয়ন্ত দত্তকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। জানা গিয়েছে, শান্তনু সরকারও বিবাদি বাগের ওই দোকানেরই কর্মী। হাজি রাশিদ মোল্লা শান্তনুর থেকে বন্দুক কিনেছিল বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। পরে ওই বন্দুক বিক্রি করা হয়েছিল ফারুকের কাছে।
শুক্রবার গভীর রাতে জীবনতলা থানার ঈশ্বরীপুর এলাকায় হানা দেয় পুলিশ। ৭০ বছর বয়সী হাজি রশিদ মোল্লার বাড়ি থেকে ২০০টি কার্তুজ এবং একটি ডাবল ব্যারেল গান উদ্ধার করা হয়। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ থানা এলাকার বাসিন্দা আশিক ইকবাল গাজি ও আব্দুল সেলিম গাজি এবং নদিয়ার শান্তিপুরের বাসিন্দা জয়ন্ত দত্তকেও গ্রেপ্তার করে বেঙ্গল এসটিএফ।
এই ঘটনাতেই তদন্তকারীদের নজরে আসে বিবাদী বাগের ওই লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুকের দোকান। তদন্তে জানা যায়, প্রত্যেকটি লাইসেন্সড দোকানের জন্য আলাদা করে বুলেট বরাদ্দ থাকে। সেই বরাদ্দ বুলেটের একটি অংশ চোরা পথে পৌঁছে যেত অস্ত্র পাচারকারীদের হাতে। তদন্তকারীদের সন্দেহ, আর এতে সক্রিয় ভূমিকা ছিল দোকানের কর্মীদের। ইতিমধ্যেই ওই দোকান সিল করা হয়েছে।
এই দোকান থেকে কত বন্দুক ও গুলি পাচার হয়েছে, এখন সেই উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স বা বেঙ্গল এসটিএফ এই ঘটনার তদন্তে নেমে বন্দুক ও কার্তুজ–সহ গ্রেপ্তার করে বছর ৩০-এর ফারুক মল্লিক নামে এক ব্যক্তিকে। তাঁর কাছ থেকে একটি ডাবল ব্যারেল বন্দুক এবং ১২ বোরের চারটি কার্তুজ উদ্ধার করেছেন তদন্তকারীরা। হাজিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই উঠে আসে তাঁর নাম।
শনিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ার বাগানাটি গ্রাম থেকে বেঙ্গল এসটিএফ গ্রেপ্তার করে ফারুককে। ফারুককে রবিবার আলিপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসটিএফের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। গোয়েন্দাদের প্রশ্ন, হিসেবের বাইরে দোকান থেকে গুলি বেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও তা মালিক জানতে পারলেন না কেন? ধৃত শান্তনুকে জেরা করে নয়া তথ্য উঠে আসতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।