এই সময়: অভিযোগটা উঠছে বেশ কিছু কাল ধরে। সেই অভিযোগকে রবিবার ‘আংশিক’ মান্যতা দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপা করলে তবেই সরকারি কমিটিতে থাকা যায়, শিক্ষা দপ্তরে ঢোকা যায়, কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতি বা এগজ়িকিউটিভ কাউন্সিলে জায়গা পাওয়া যায়— বিরোধীদের এই অভিযোগকে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ‘আংশিক’ মান্যতা দিলেন।
রবিবার ব্রাত্য বলেন, ‘এই অভিযোগের আংশিক সত্যতা রয়েছে, এ টুকু আমি বলতে পারি।’ কেন? মন্ত্রীর যুক্তি, ‘এটা সরকারের সঙ্গে থাকা একটা সংগঠন। আমিই এই সংগঠনের সভাপতি, আবার আমি সরাসরি রাজনৈতিক মানুষ। তা হলে আমার এখানে যদি কোনও কমিটি হয়, আমি তো চাইব যে, সেখানে আমার সংগঠনের লোকই থাক।’ তবে ব্রাত্য এ–ও জানান, সরকারের নানা কাজে, শিক্ষা দপ্তরের বিভিন্ন কমিটিতে কোনও দল–ই করেন না, এমন বহু শিক্ষাবিদকে রাখা হয়েছে। ব্রাত্যর বক্তব্য, উপাচার্য বাছাই কমিটিতেই এমন প্রচুর সংখ্যক শিক্ষাবিদকে রাখা হয়েছিল, এমনকী ভিসি–ও হয়েছেন ভিন রাজ্য থেকে আসা শিক্ষাবিদ। কিন্তু তৃণমূল করেন বলেই অধ্যাপকদের সেই অংশ অপাংক্তেয় হয়ে যাবেন, এ কথায় তিনি বিশ্বাস করেন না বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন।
এ দিন দমদমের অজিতেশ মঞ্চে ওয়েবকুপার রাজ্য কমিটির বৈঠকে হাজির ছিলেন মন্ত্রী তথা সংগঠনের সভাপতি ব্রাত্য। সূত্রের খবর, মিটিংয়ে তিনি অধ্যাপকদের উদ্দেশে আরও একবার ‘মমতাবাদী’ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন এবং সবাইকে সতর্ক করে বিরোধী অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুটার মতো কাউকে চোখ না–রাঙাতে বলেছেন।
বৈঠকে উপস্থিত এক অধ্যাপকের কথায়, ‘মন্ত্রী বলেছেন, তিনি নিজে যখন সিপিএম জমানায় অধ্যাপক ছিলেন, তখন তিনি দেখেছেন, নিরীহ এবং সরকার–বিরোধীমনস্ক অধ্যাপকদের ওয়েবকুটা কী ভাবে হেনস্থা করত। সেই সংস্কৃতি যাতে ওয়েবকুপার মধ্যে চলে না–আসে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার কথা মন্ত্রী বলেছেন।’ এ দিনের বৈঠকেও ওয়েবকুপা করলে সরকারি কমিটি–সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকা যাবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন, তবে দেখা হবে সেই অধ্যাপকদের যোগ্যতাও।
ওয়েবকুপা করলে তবেই পদ, শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ওয়েবকুটার প্রেসিডেন্ট শুভোদয় দাশগুপ্তর প্রতিক্রিয়া, ‘সে তো তৃণমূল করলেই চাকরি পাওয়া যাবে, এমন কথাও আমরা আগে শুনেছি। এটাও তেমন।’
ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলন হবে ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ৫ মার্চ পুরুলিয়ায় স্টেট কনভেনশন।