এই সময়, গোরুমারা: চোখ দিয়ে প্রকৃতিকে দেখার সুযোগ হয় না ওদের। কিন্তু তাকে কী? বাকি ইন্দ্রিয়েরা তো অনেক বেশি সজাগ। সেই সব দৃষ্টিহীন পড়ুয়াদের প্রকৃতি–পাঠ দিতেই বারবার এগিয়ে এসেছে হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন (ন্যাফ)। এ বারও তার ব্যতিক্রম হলো না।
গোরুমারা জঙ্গল ঘেঁষা মূর্তি নদীর ধারে শুরু হলো গন্ধ ও স্পর্শের মাধ্যমে বন্যপ্রাণ ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র উপলব্ধি করার শিবির। চলতি বছর এই উদ্যোগ পা রাখল ২৩ তম বর্ষে। ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরে আমরা এই উদ্যোগ নিয়ে আসছি। শিবিরে অংশ নেওয়া প্রত্যেকে স্পর্শ ও ঘ্রাণের মাধ্যমে বন ও বন্যপ্রাণকে জানতে পারবে সহজেই। মঙ্গলবার এখানে গোরুমারার কুনকি হাতিদের সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠবে আমাদের পড়ুয়ারা।’
বেশ কয়েক বছর আগে প্রকৃতিকে কাছ থেকে চেনাতে সেই সকল শিশুদের জন্য এগিয়ে এসেছিল ন্যাফ। সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে গয়েরকাটা আরণ্যক এবং লাটাগুড়ি সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার। বন দপ্তরের যৌথ সহযোগিতায় প্রতি বছর শীতের মরশুমে এই প্রকৃতিপাঠ শিবিরের আয়োজন করে ন্যাফ।
রবিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হলো সেই পাঠদান। পদ্মশ্রী করিমুল হক অনুষ্ঠানের সূচনা করলেন। সঙ্গে ছিলেন মেটেলি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হোসেন হাবিবুল হাসান–সহ অন্যান্যরা।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন অনুষা ওঁরাও, রাজু ভূমিচ, শর্মিলা বেরা, পঙ্কজ খেরিয়া, সূজন রায়, জনক ওঁরাও–সহ আরও অনেকে। কেই এসেছে নাগরকাটা থেকে তো কেউ গয়েরকাটা, কুমলাও থেকে। আবার কারও বাড়ি ক্রান্তি এবং জলপাইগুড়ি।
সকলেই প্রত্যন্ত চা বাগান ও বনবস্তির বাসিন্দা। ওঁরা জন্ম থেকেই দৃষ্টি থেকে বঞ্চিত। কিন্তু আলোর থেকে নয়। শিবিরে মোট ৫০ জন অংশ নিয়েছেন। তাঁদের পাচটি দলে ভাগ করে চলছে অনুশীলন। তাঁরা বিভিন্ন গাছপালা, ফুল, বন্যপ্রাণীর মূর্তি ও জীবন্ত প্রাণীকে স্পর্শ করার সুযোগ পাচ্ছেন। সেই সঙ্গে থাকছে নাচ–গান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ক্যাম্প ফায়ার।