• 'কর্মসূত্রে বাংলায় থাকলে, কর্মক্ষেত্রে বাংলা বলা জরুরি', দীপ্সিতার ফেসবুক পোস্টে বাংলা ভাষার সওয়াল...
    আজকাল | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: হিন্দি আগ্রাসন নিয়ে বারবার বিভিন্ন আঞ্চলিক দল সরব হয়েছে। বিজেপির উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মুখে শোনা গিয়েছে জয় বাংলা স্লোগান। উত্তর-ভারতের সাংস্কৃতিক আগ্রাসন নিয়ে বাংলার বুদ্ধিজীবী সমাজও প্রশ্ন তুলেছে নানা সময়ে। এ বার হিন্দি আগ্রাসনের উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে বাংলা ভাষার পক্ষে সরব হলেন সিপিআইএম-এর নবীন প্রজন্মের নেত্রী দীপ্সিতা ধর। ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট লিখলেন তিনি। বাংলা পক্ষ-সহ একাধিক সংগঠন যেমন দীর্ঘদিন ধরে বাংলায় কাজ করার অন্য়তম শর্ত হিসাবে বাংলা ভাষা শেখার কথা বলছে, দীপ্সিতা সেই ভাবেই লিখলেন, 'কিন্তু কর্মসূত্রে বাংলায় থাকলে, কর্মক্ষেত্রে বাংলা বলা জরুরি।'

    পশ্চিমবঙ্গে হিন্দি না বলাটা এক ধরণের “অপরাধ” হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ দীপ্সিতার। কী লিখেছেন তিনি? সোমবার একটি পোস্টে তিনি লেখেন, দৈনন্দিন জীবনে পশ্চিমবঙ্গে হিন্দি না বলাটা অপরাধের শামিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর পেছনে এক বৃহত্তর ‘ষড়যন্ত্রের’ দিকেও ইঙ্গিত করেন তিনি। মাথার মধ্যে হিন্দিকে 'ভারতের রাষ্ট্র ভাষা, ভারতের ইউনিভার্সাল ভাষা, কাজের ভাষা', হিসেবে ঢুকিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেন দীপ্সিতা। স্পষ্টতই তাঁর ইঙ্গিত কেন্দ্রের শাসক দলের বিরুদ্ধে। 

    ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দল বিজেপি'র প্রাক্তন সভাপতি অমিত শাহ দেশের প্রধান ভাষা হিসাবে হিন্দিকে তুলে ধরার কথা প্রচার করে চলেছেন লাগাতার। যা নিয়ে দক্ষিণ ভারতে প্রবল প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। এই নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খোদ দক্ষিণের বিজেপি নেতারাও। 

    হিন্দির এই আগ্রাসন আসলে বিজেপির এক বৃহত্তর পরিকল্পনা বলে তিনি উল্লেখ করেন, “আমাদের মতো বহুভাষী দেশে কোনও ভাষার আরোপিত সমসত্বতা আসলে আগামীর সাংস্কৃতিক, ধার্মিক এবং অবশ্যই রাজনৈতিক সমসত্বতার প্রাথমিক সোপান। এবং এই নির্মাণে আদতে লাভ কার হয় আমরা সকলেই তা জানি”। একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ পুঁজি, বাজার, চাকরীর সংকট থেকে নজর ঘোরাতেই এই ভাষা আগ্রাসন।

    ফেসবুকে করা পোস্টটি নিমেষে ভাইরাল হলে তাঁকে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি জাত্যাভিমান নিয়ে কেন বাম নেত্রী সরব হলেন তা নিয়ে উড়ে আসে তির্যক মন্তব্যও। তাহলে কি বাংলা পক্ষকে পাল্লা দিচ্ছে সিপিএম? সেখানেও নিজের রাজনৈতেক অবস্থান স্পষ্ট করেন দীপ্সিতা।  তাঁর সাফ জবাব তিনি বা বামপন্থীরা হিন্দি বিরোধী নন। তাঁরা হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে। তাঁর মতে হিন্দি বলা আর হিন্দি বলতে বাধ্য করার মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। তিনি উল্লেখ করেন ডিজিটাল যুগে বহুভাষী হওয়াটা স্বাভাবিক, কিন্তু “কিন্তু কর্মসূত্রে বাংলায় থাকলে, কর্মক্ষেত্রে বাংলা বলা জরুরি। কোনো বাঙালিকে তার রাজ্যে অন্য ভাষা বলতে বাধ্য করা যাবে না, এইটুকুই”।
  • Link to this news (আজকাল)