‘ভায়ালে কী যেন ভাসছে...!’ নির্দিষ্ট একটি স্ট্রোকের ইনজেকশন বন্ধ আরজি করে
হিন্দুস্তান টাইমস | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
এর আগে নির্দিষ্ট একটি সংস্থার তৈরি স্যালাইনের বোতলের ভিতর ফাঙ্গাস ভাসতে দেখা গিয়েছিল। আর, এবার ইনজেকশনের ভায়ালের ভিতর 'কিছু একটা' ভাসতে দেখা গেল! যার জেরে সংশ্লিষ্ট ওই সংস্থার তৈরি ইনজেকশন ব্যবহার না করার নির্দেশিকা জারি করা হল কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং প্রকাশ্যে আসা সেই নির্দেশিকার প্রতিলিপি অনুসারে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি সেটি জারি করা হয়েছে উত্তর কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে।
যে ইনজেকশনটি ব্যবহার না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেটি হল - ভিশন পেরেন্টাল প্রাইভেট লিমিটেড সংস্থার তৈরি একটি ফ্লুইড ইনজেকশন। যেটি মূলত কোনও রোগী ম্যানিটল স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে, তাঁদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, হাসপাতালের নার্সদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট রিপোর্ট বা অভিযোগ পেয়েই এই পদক্ষেপ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়কে উদ্ধৃত করে এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, 'আমাদের এখানে নিয়ম রয়েছে, যে কোনও ওষুধ বা স্যালাইন দেওয়ার আগে নার্সরা সবাই তা ভালো করে দেখে নেন ৷ সেখানেই আমাদের নার্স দিদিরা দেখতে পান একটা সাদা রঙের কিছু একটা ভাসছে! দেখার পরই তাঁরা আমাকে জানান। তখনই আমরা চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে এই ইনজেকশন বন্ধ করতে বলেছি। যে যে ওয়ার্ডে এই ইনজেকশন রয়েছে, সবাইকে এর ব্যবহার বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি।'
এই ঘটনায় খুব স্বাভাবিকভাবেই রোগীদের মধ্যে একইসঙ্গে সন্তোষ ও উদ্বেগের ছবি ধরা পড়েছে। তাঁদের বক্তব্য, একের পর এক সরকারি হাসপাতালে যদি এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে গরিব, নিম্নবিত্ত, খেটে খাওয়া মানুষ কোথায় নিশ্চিন্ত মনে চিকিৎসা করাতে যাবে। কারণ, তাঁদের তো আর অনেক টাকা খরচ করে বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার উপায় নেই।
আবার রোগীদের একাংশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদও জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসকরা সচেতন ছিলেন বলেই এই ঘটনা তাঁদের নজরে এসেছে এবং কর্তৃপক্ষও ঘটনার গুরুত্ব বুঝে পদক্ষেপ করেছে। এতে বহু মুমূর্ষু রোগীর প্রাণ বাঁচল বলে মনে করছেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি একটি নির্দিষ্ট সংস্থার তৈরি রিঙ্গার লাক্টেড স্যালাইন নিয়ে রাজ্যজুড়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, মেদিনীপুর মেডিক্যালে ওই স্যালাইন ব্যবহার করার ফলেই চার প্রসূতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং একজনের মৃত্যু হয়। আরও অভিযোগ ওঠে, অনেক আগেই সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোল কর্তৃপক্ষ ওই স্যালাইন বন্ধের নির্দেশ দিলেও একাধিক সরকারি হাসপাতাল সেই নির্দেশ মানেনি।