নয়াদিল্লি রেলস্টেশনে কুম্ভমেলার পুণ্যার্থীদের অতিরিক্ত ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যুর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সতর্ক হল পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। কুম্ভমেলায় প্রয়াগরাজগামী ট্রেনগুলিতে যাত্রীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে শিয়ালদহ ডিভিশনের ডিআরএম ১১ দফার নির্দেশিকা জারি করেছেন।
প্রধান নির্দেশনাগুলি:
১. প্রত্যেক কুম্ভগামী ট্রেনের জন্য নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম বরাদ্দ থাকবে। একবার ঘোষণা হলে তা পরিবর্তন করা যাবে না।
২. ন্যাশনাল ট্রেন এনকোয়ারি সিস্টেমে ট্রেনের নির্ভুল তথ্য সরবরাহ করা হবে, যাতে বিভ্রান্তি না হয়।
৩. ডিসপ্লে বোর্ডে সঠিক তথ্য নিশ্চিত করা হবে, যাতে প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তনের কারণে সমস্যা না হয়।
৪. অসংরক্ষিত টিকিট বিক্রিতে নিয়ন্ত্রণ আনা হবে। ট্রেনের অতিরিক্ত চাহিদা থাকলে টিকিট বিক্রি বন্ধ করা হবে।
৫. ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কুম্ভগামী বিভিন্ন ট্রেনের স্লিপার ক্লাসের টিকিট বিক্রি সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হবে।
৬. আরপিএফ বাহিনী সিসিটিভির মাধ্যমে স্টেশনজুড়ে কড়া নজরদারি চালাবে।
৭. প্রত্যেক প্রয়াগরাজগামী ট্রেনে আরপিএফ মোতায়েন থাকবে, যাতে যাত্রীদের সুষ্ঠুভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
৮. জরুরি পরিষেবার জন্য স্টেশনে অতিরিক্ত ব্যাটারিচালিত গাড়ি, হুইলচেয়ার ও স্ট্রেচার রাখা হবে।
৯. ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুল্যান্স ও পর্যাপ্ত চিকিৎসক শিয়ালদহ স্টেশনে প্রস্তুত রাখা হবে।
১০. পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, পরিচ্ছন্নতা ও কর্মীবাহিনী নিশ্চিত করতে স্টেশন ম্যানেজার দায়িত্বে থাকবেন।
নয়াদিল্লির ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে এই উদ্যোগ
সম্প্রতি নয়াদিল্লি রেলস্টেশনে কুম্ভযাত্রীদের বিপুল ভিড়ের কারণে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। অভিযোগ, প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তন এবং ট্রেন দেরির কারণে যাত্রীদের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। বিশেষ করে, ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ট্রেন শেষ মুহূর্তে ১৬ নম্বরে পাঠানো হয়, ফলে ভিড়ের চাপে অনেকে পড়ে যান। রেল কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হয়।
এই ঘটনার পর শিয়ালদহ কর্তৃপক্ষ আগেভাগেই ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে প্রয়াগরাজগামী যাত্রীদের জন্য নিরাপদ ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়।
কুম্ভমেলা উপলক্ষে রেলস্টেশনগুলিতে বিপুল সংখ্যক পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। অতীতে বিভিন্ন দুর্ঘটনার সাক্ষী থেকেছে রেল কর্তৃপক্ষ। নয়াদিল্লির ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সে জন্য শিয়ালদহ ডিভিশনের নেওয়া ১১ দফা ব্যবস্থা কার্যকর হলে যাত্রীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।