অন্য পশু ছেড়ে শুধু ভেড়াদের আক্রমণ করছে অজানা জন্তু, তটস্থ গোবরান্দা গ্রাম
বর্তমান | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: শুক্রবারের পর রবিবার রাতেও পুরুলিয়া জেলার রঘুনাথপুর থানার গোবরান্দা গ্রামে আবার অজানা জন্তুর আক্রমণে ৮টি ভেড়ার মৃত্যু হয়েছে। চারটি ভেড়া জখম হয়েছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পর পর তিনটি বাড়িতে অজানা জন্তুর আক্রমণে ৩০টির বেশি ভেড়ার মৃত্যু হয়েছে। গোয়ালঘরে গোরু, ছাগল থাকলেও শুধুমাত্র ভেড়াদের উপর আক্রমণের ঘটনায় গ্রামে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রাত থেকে গ্রামের বাসিন্দারা আতঙ্কে ভুগছেন। গ্রামবাসীরা নিরাপত্তা চেয়ে সোচ্চার হয়েছেন। সোমবার বনদপ্তরের আধিকারিক ও রঘুনাথপুর থানার পুলিস গ্রামে যায়। তাঁরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। গ্রামবাসীদের অযথা আতঙ্কিত না হতে বলা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত্রে ওই গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়িতে অজানা জন্তুর আক্রমণে ১২টি ভেড়ার মৃত্যু হয়েছিল। বেশ কয়েকটি ভেড়া আহত হয়েছিল। শনিবার বিষয়টি জানার পরেই জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। বনদপ্তরের তরফ থেকে গ্রামে রাত্রে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়। রবিবারও বনদপ্তরের কর্মীরা পাহারায় ছিলেন। কিন্তু তাঁদের চোখ এড়িয়ে অজানা জন্তু গ্রামের এক ব্যক্তির গোয়াল ঘরে ঢুকে ১২টি ভেড়াকে আক্রমণ করে। সোমবার সকালে ছ’টি ভেড়াকে গোয়ালে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। দু’টি ভেড়ার সন্ধান মেলেনি এবং চারটি ভেড়াকে গুরুতর জখম অবস্থায় পাওয়া যায়। অথচ ভেড়াদের সঙ্গে ছ’টি ছাগল বাঁধা ছিল, পাশে দু’টি গোরুও ছিল। অদ্ভুত ব্যাপার, ছাগল ও গোরুদের গায়ে আঁচড়টিও লাগেনি। এই অদ্ভুত ঘটনায় আতঙ্ক আরও বেড়েছে।
মৃত ভেড়ার মালিক হারু বাউরি বলেন, পশুপালন করেই সংসার চলে। ওইদিন রাত আনুমানিক ১২টা নাগাদ অজানা কোনও জন্তু আমাদের গোয়াল ঘরে ঢুকে ভেড়াদের আক্রমণ করে। পাশেই গোরু ও ছাগল থাকলেও তাদের কোনও ক্ষতি করেনি। আবার ভেড়াগুলি মেরে দেওয়ার পর তাদের রক্ত পর্যন্ত মাটিতে পড়েনি। ওই জন্তু সমস্ত রক্ত চুষে খেয়ে নিচ্ছে।গ্রামের বাসিন্দা, মীরা বাউরি, তুলা বাউরি বলেন, রাত্রে বাড়ি থেকে বের হতে ভয় হচ্ছে। বাড়িতে ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে। এখন পশুদের উপর আক্রমণ হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু আগামী দিনে মানুষের উপর আক্রমণ হলে কী করব। সমস্ত গ্রামবাসী আতঙ্কে রয়েছে। গ্রামের যুবক সুমন বাউরি বলেন, বাইরে কাজ করি। রাত্রে বাড়ি আসি। গ্রামের ঘটনা শুনে প্রচণ্ড ভয়ের মধ্যে রয়েছি। বনদপ্তরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, রাত্রে পাহারাদারের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এলাকায় সিসি ক্যামেরা লাগানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। কিছু জায়গায় জাল বিছানো হবে। অন্য কোনও পশুদের আক্রমণ না করে শুধুমাত্র ভেড়াদের আক্রমণ করায় যথেষ্ট চিন্তা দেখা গিয়েছে। রঘুনাথপুর বনাঞ্চলের রেঞ্জার নিলাদ্রী সখা বলেন, মৃত ভেড়াগুলির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। সমস্ত বিষয়টি নজরে রাখা হচ্ছে।