• বহরমপুরের চিত্রশিল্পী সুদীপের ছবি যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর সংগ্রহে
    বর্তমান | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বহরমপুর: তুলির টানে বহরমপুরের মানুষের মন ছুঁয়েছেন আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী সুদীপ রায়। বহরমপুর হেড পোস্ট অফিসের পাশে বিশাল প্রদর্শশালায় সুদীপবাবুর আঁকা ৪০টি ছবির প্রদর্শনী চলছে। তার মধ্যেই একটি পাড়ি দেবে কলকাতায়, মুখ্যমন্ত্রীর সংগ্রহে। 


    সুদীপের প্রতিটি ছবির বিষয়বস্তু আলাদা হলেও বেশিরভাগ ছবিতে একটি সাধারণ বিষয় রয়েছে। সেটি হল, তেল ফুরিয়ে আসা লন্ঠনবাতি ও মৃদু জ্যোৎস্নার নিস্প্রভ চাঁদ। শিল্পী সুখ ও দুঃখকে একই ফ্রেমে ফুটিয়ে তুলেছেন জল রঙের কারসাজিতে। সুদীপ রায় বলেন, মানুষের জীবনে সুখ-দুঃখ দুই-ই রয়েছে। সুখ ক্ষণস্থায়ী। দুঃখকে আমরা বেশি মনে রাখি। আমি ছবিতে সেটাই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। গত ৮ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রদর্শনী চলার কথা। কিন্তু মানুষের এত সাড়া মিলছে যে, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সমসয়সীমা বাড়ানো হয়েছে।


    লালগোলার প্রত্যন্ত গ্রাম খান্দুয়ায় জন্ম সুদীপের। সেখান থেকে উঠে আসেন বহরমপুরে। কলকাতা সরকারি আর্ট স্কুল থেকে পাশ করে কেন্দ্র সরকারের চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু মাত্র ন’ বছর চাকরি করে ছেড়ে দেন। দিল্লি থেকে ইব্রাহিম আলকাজির ডাক পেয়ে সুদীপবাবুর জীবনের গতিপথ বদলে যায়। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই থেকে শুরু করে লন্ডন, প্যারিস, আমেরিকা সহ বহু বিদেশের ভূমিতে একের পর এক চিত্র প্রদর্শনী সুদীপবাবুকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে। নিজের আঁকা ছবি নিয়ে এবার নিজের শহর বহরমপুরে এসেছেন সুদীপ। তিনি বলেন, জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র তাঁকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন।


    অতীত ঐতিহ্য— যাকে ভিন্টেজ বলে। আলো আঁধারির খেলা, ছবির মাঝে ঝলসে ওঠা আলোর ঝলকানি—যাকে পরিভাষায় বলে ‘কিয়ারোস্কুরো’। সুদীপবাবুর ছবির আঙ্গিকে সেই কিয়ারোস্কুরোর খেলা ফুটে উঠেছে। রাম যাত্রাপালা, প্রাচীন স্থাপত্য, অশান্ত সমুদ্র জল রঙে ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী। 


    ১৯৭৯ সালে সাহিত্য পরিষদের স্বর্ণপদক, ১৯৮২ সালের ফাইন আর্টসের স্বর্ণপদক সহ একাধিক পদক উঠেছে শিল্পীর ঝুলিতে। রাজনীতি থেকে শুরু করে সিনেমা জগতের বহু দিকপালদের বাড়ির শোভা বাড়িয়েছে শিল্পীর আঁকা ছবি। বহরমপুর আর্ট এগজিবিশন থেকে শিল্পীর আঁকা ছবি যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। সুদীপবাবু জানালেন, জেলাশাসক ওই ছবিটি সংগ্রহ করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাচ্ছেন। প্রদর্শনীর পাশাপাশি রোজ বসছে শিল্প ও সাহিত্য জগতের আড্ডা।
  • Link to this news (বর্তমান)