সংবাদদাতা, সিউড়ি: রেলের জায়গা থেকে সরিয়ে দেওয়া বাজার ব্লক অফিস সংলগ্ন স্থায়ী জায়গায় বসার ব্যবস্থা করল প্রশাসন। ফলে সেখানকার সব্জি, মাছ, মাংস সহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সাময়িক স্বস্তি পেলেও নতুন জায়গায় পর্যাপ্ত জায়গার অভাব এবং বিকিকিনিতে টান ধরায় কিছুটা হলেও সমস্যায় রয়েছেন তাঁরা। জেলার সাঁইথিয়া ব্লকের আহমদপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলছিল একটি সব্জির বাজার। সেই বাজার গত চারমাস আগেই উচ্ছেদ করেছিল রেল। তারপর ব্যবসায়ীরা আহমদপুর সিউড়ি ও লাভপুর রাস্তার ধারে বসায় এলাকায় দারুণ সমস্যা হচ্ছিল। ক্রেতা বিক্রেতা থেকে পথচারী সকলেরই সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল। তাই ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে আহমদপুরে সাঁইথিয়া বিডিও অফিসের কাছেই সুকান্তপল্লিতে একটি ফাঁকা সরকারি জায়গায় সেই বাজারের ব্যবসায়ীদের বসার ব্যবস্থা করা হয় মাস দুয়েক আগে। সেখানেই স্থায়ীভাবে এই বাজার বসছে এখন। কিন্তু এই জায়গাটি জনবহুল এলাকা থেকে একটু দূরে হওয়ায় বিকিকিনিতে কিছুটা টান পড়েছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ। তাই অনেকেই ফের আহমদপুর স্টেশন সংলগ্ন ফ্লাইওভারের দুই পাশে এবং রাস্তায় বসে বেচাকেনা করছেন। কিন্তু ফের রেল কর্তৃপক্ষ এই রেলের ফ্লাইওভার ও স্টেশন সংলগ্ন রাস্তা খালি করে দেওয়ার নোটিস জারি করে। জানা গিয়েছে, ১৩ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ছিল সেই নোটিসের শেষদিন। তাই সেই নোটিসের কারণে ওভারব্রিজের দুই পাশে থাকা অস্থায়ী ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানের পসরা সরিয়ে নিচ্ছেন। স্থায়ী সব্জি বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, রাস্তায় বা রেলের ওভারব্রিজের আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব ব্যবসায়ী যদি এক জায়গায় বসেন, তাহলে সেখানেই এলাকার বাসিন্দারা বেচাকেনা করতে আসবেন এবং ব্যবসায়ীদের বিকিকিনিও ভালো হবে।
স্থানীয় এই সব্জি বাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন এই বাজারের জায়গায় এখন ১৪৬ জন সব্জি ও ৪০ জন মৎস্য ব্যবসায়ী দোকান করেছেন। কিন্তু এখন প্রায় ৭৫ জন ব্যবসায়ী রাস্তার ধারে বা ওভারব্রিজ সংলগ্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসছেন। স্থায়ী বাজারে খুচরো বিক্রেতাদের নির্দিষ্টভাবে আট ফুট বাই আট ফুট করে এবং আড়ৎ ব্যবসায়ীদের ১২ ফুট বাই ১৫ ফুট জায়গা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই দোকানের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় অনেকখানি ছোট বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। তাছাড়া নতুন এই বাজারে পর্যাপ্ত জায়গার অভাবে বাকি ব্যবসায়ীদের বসার যথেষ্ট জায়গা নেই বলে অভিযোগ। এছাড়া মেইন রাস্তা থেকে সরাসরি বাজারে প্রবেশের একটি রাস্তাও প্রয়োজন আছে বলে তাঁদের দাবি। তাই এই বাজারের জায়গা আরও কিছুটা বৃদ্ধির জন্য দাবি রয়েছে ব্যবসায়ীদের।
ব্যবসায়ী গৌরাঙ্গ দে বলেন, এই বাজারে অনেক ক্রেতা আসতে চাইছেন না। তবে যদি সব ব্যবসায়ী এক জায়গায় বসেন, তাহলে ক্রেতারা এখানেই আসবেন। কিন্তু এখানে সব ব্যবসায়ী বসার মতো পর্যাপ্ত জায়গার অভাব রয়েছে। উল্লেখ্য, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ পথে আহমদপুর রেল স্টেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সিউড়ি, পুরন্দরপুর, লাভপুর, কীর্ণাহার সহ অন্যান্য জায়গা থেকে এখানে ট্রেন ধরতে যাতায়াত করেন। তাঁরা এই সব্জি বাজারেই বাজার করতেন। কিন্তু এখন বাজার দূরে হওয়ায় রেলযাত্রীরা নতুন বাজারে আসছেন না বলে অভিযোগ।