নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: কোচবিহারের মহারাজা জিতেন্দ্রনারায়ণ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগের এক নিরাপত্তা কর্মীর মদ্যপানের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় রবিবার সন্ধ্যার পর থেকে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। ওই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, এক নিরাপত্তা কর্মী মাতৃমা বিভাগের ভিতরে বসে রীতিমতো মদ খাচ্ছেন। যদিও ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘বর্তমান’।
রবিবার মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, ওই ভিডিওটি দেড়বছর আগের। যদিও সোমবার মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই কর্মীর বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিল। ওই কর্মীকে বরখাস্ত করে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। সেই তদন্ত কমিটিকে সাতদিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ডাঃ নির্মলকুমার মণ্ডল, এমএসভিপি ডাঃ সৌরদীপ রায় ও কলেজের রোগী কল্যাণ সমিতির জনপ্রতিনিধি অভিজিৎ দে ভৌমিক এদিন তড়িঘড়ি বৈঠকে বসেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ওই নিরাপত্তা কর্মীকে কাজ থেকে ‘টেম্পোরারি উইথড্র’ করা হল। সেই মর্মে যে এজেন্সি মারফত ওই কর্মী নিযুক্ত ছিলেন সেই এজেন্সিকেও জানিয়ে দেওয়া হয়।
সুপার ডাঃ সৌরদীপ রায় বলেন, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই নিরাপত্তা কর্মীকে এদিন কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই নিরাপত্তা কর্মী মাতৃমার সুপারভাইজার ছিলেন। ঘটনার পর তিনি কিছু দিন সাসপেন্ড ছিলেন। পরে মুচলেকা দিয়ে আবার কাজে যোগ দিয়েছিলেন। প্রকৃত ঘটনা খতিয়ে দেখে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দিলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
বির্তক যেন পিছু ছাড়ছে না কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজের। গত সপ্তাহে মেডিক্যালের ইন্টার্নের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। এরপরেই আবার এক নিরাপত্তা কর্মীর মদ্যপানের ভিডিও ভাইরাল। মেডিক্যাল কলেজের মাতৃমা বিভাগে প্রসূতিরা ভর্তি থাকেন। সেখানে বসে একজন নিরাপত্তা কর্মী কীভাবে মদ খান তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজের দাবি, ওই ভিডিওটি বহু পুরনো। সেই যুক্তি যদি মেনে নেওয়া যায় তাহলে কীভাবে ওই ব্যক্তিকে ফের কাজে বহাল করা হল? শুধু মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়াই কি যথেষ্ট?
মেডিক্যালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যখন ঢেলে সাজানো হচ্ছে তখন মাতৃমা বিভাগের মতো অত্যন্ত স্পর্শকাতর জায়গায় কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন বিভিন্ন মহলের। আবার ঘটনাটি যদি দেড়বছর আগেরই হয়ে থাকে তাহলে কী উদ্দেশ্যে সেই ভিডিও এতদিন পর ভাইরাল হল? এর পিছনে কি উদ্দেশ্য রয়েছে সেটিও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকেই।