সাত বছর প্রকল্প চললেও শিলিগুড়িতে তিনটি অর্থবর্ষে আবাসের সুবিধা থেকে বঞ্চিত দরিদ্ররা
বর্তমান | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ‘হাউজিং ফর অল’ প্রকল্পের মেয়াদ সাত বছর। কিন্তু, তিনটি অর্থবর্ষেই প্রকল্পের সুবিধা পায়নি দুঃস্থরা। এমন ঘটনা শিলিগুড়ি শহরের। সৌজন্যে সিপিএম পরিচালিত বিগত পুরবোর্ড ও কোভিড মহামারি। সোমবার সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনার পর এমনই কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত বর্তমান পুরবোর্ডের মেয়র গৌতম দেব। তাঁর অভিযোগ, নিজেদের মেহনতি মানুষের প্রতিনিধি বলে দাবি করলেও শহরে গরিবদের গৃহ নির্মাণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছে সিপিএম। যদিও প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা মেয়র অশোক ভট্টাচার্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। পাল্টা তিনি সংশ্লিষ্ট প্রকল্প নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। উভয়ের বাকযুদ্ধ ঘিরে শহরে শোরগোল পড়েছে।
২০১৫ সালে হাউজিং ফর অল প্রকল্পের সূচনা করে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার। সেই সময় শিলিগুড়ি পুরসভার দায়িত্বে ছিল সিপিএম নিয়ন্ত্রিত বামফ্রন্ট। পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৫-’১৬ অর্থবর্ষ থেকে প্রকল্পের অর্থবরাদ্দ শুরু করে কেন্দ্র। প্রকল্পটি চলে ২০২১-’২২আর্থিকবর্ষ পর্যন্ত। কিন্তু, প্রকল্পের প্রথম আর্থিক বছরের সুবিধা নিতে পারেনি পুরসভা। প্রকল্পের তৃতীয় অর্থাৎ, ২০১৭-’১৮অর্থবর্ষের বরাদ্দই মেলেনি। সংশ্লিষ্ট দু’টি বছর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উপভোক্তা তালিকা প্রস্তুত করে দাখিল করতে পারেনি তদানিন্তন পুরবোর্ড। এরপর কোভিড মহামারির কারণে ২০২০-’২১অর্থবর্ষে প্রকল্পের বরাদ্দ মেলেনি। এরজেরেই শহরের অসংখ্য গরিব মানুষ মাথার উপর ছাদ গড়তে পারেননি।
এদিন এমনই তথ্য দিয়ে তৃণমূল শাসিত পুরসভার মেয়র বলেন, সিপিএমশাসিত বিগত পুরবোর্ডের হাতে প্রকল্পের বরাদ্দ ৩৬কোটি ৭০লক্ষ টাকা থাকলেও তারা গরিব মানুষদের মধ্যে বণ্টন করেনি। প্রকল্প পরিচালনার ক্ষেত্রে দক্ষতার অভাব ছিল। যারজন্য দরিদ্ররা বঞ্চিত হয়েছেন। কিন্তু, প্রশাসনিক বোর্ড দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রকল্পের ২৬কোটি ৫লক্ষ টাকা প্রকল্পের উপভোক্তাদের মধ্যে বণ্টন করেছি। নির্বাচিত বোর্ড গঠিত হওয়ার পর আরও ৯১কোটি ৭৪লক্ষ ২৮হাজার টাকা বণ্টন করা হয়। এখনও পর্যন্ত প্রকল্পের উপভোক্তাদের মধ্যে প্রায় ১১৮কোটি টাকা বিলি করা হয়েছে।
প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোকবাবু দীর্ঘদিন মেয়র ছিলেন। তিনি বলেন, সেই সময় কি হয়েছে, মনে নেই। তবে, আবাস যোজনা সহ বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়ে গোটা রাজ্যে দুনীর্তি করেছে বর্তমান সরকার। তারা নির্দিষ্ট সময়ের প্রকল্পের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দিতে পারছে না। কাজেই, ওই ব্যর্থতার জন্য বর্তমান রাজ্য সরকারই দায়ী।
পুরসভা সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে চারটি অর্থবর্ষে মোট উপভোক্তার সংখ্যা ৫৫৩৫ জন। যারমধ্যে গৃহ নির্মাণ হয়েছে ১৭৩৩ জনের। বাকি ৩৮০২ জনের গৃহ নির্মাণ চলছে।