নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সম্পত্তি কর খাতে আয় সামান্য বেড়েছে। সার্বিকভাবে রাজস্ব খাতে আয় বৃদ্ধিও যৎসামান্য। এই পরিস্থিতিতে ঘাটতি আর না বাড়িয়ে অর্থাৎ গত বছরের বাজেটের (২০২৪-২৫ অর্থবর্ষ) অনুরূপ ঘাটতি রেখে আগামী অর্থবর্ষের (২০২৫-২৬) বাজেট করাটাই চ্যালেঞ্জ কলকাতা পুরসভার কাছে। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পুর-বাজেট পেশ করবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ইতিমধ্যে বাজেট তৈরির কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। সম্ভাব্য বাজেট নিয়ে পুরসভার অন্দরে নানা জল্পনাও চলছে। পুরসভার অর্থবিভাগ সূত্রে খবর, গত বারের বাজেটে উল্লেখিত ঘাটতি এবার প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
জানা গিয়েছে, চলতি অর্থবর্ষে (১ এপ্রিল, ২০২৪ থেকে ৩১ মার্চ, ২০২৫) ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজস্ব খাতে পুরসভার আয় হয়েছে ১৬০৮ কোটি ১২ লক্ষ টাকা। গত অর্থবর্ষে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই খাতে ১৫৪৭ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা আয় হয়েছিল। অর্থাৎ, এবার মাত্র প্রায় ৬০ কোটি টাকা বেশি আয় হয়েছে। শুধুমাত্র সম্পত্তি কর খাতে বাড়তি ২৮ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা এসেছে পুর-কোষাগারে। এই বৃদ্ধি আশানুরূপ নয় বলেই মনে করছেন বিভাগীয় আধিকারিকরা। অন্যান্য বছর যেখানে ১০ থেকে ১২ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি হয়, সেখানে চলতি বছরে লক্ষ্যমাত্রার ধারেকাছেও আপাতত পৌঁছনো যায়নি। তবে চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে এখনও মাস দেড়েক বাকি। শেষের দিকে আয় কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশাবাদী পুরকর্তারা।
এই প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ মনে করছে, বাজেট ঘাটতি গত বছরের অনুরূপ রাখতে পারলে সেটাই অনেক। কারণ, বিভিন্ন খাতে খরচ যে হারে বেড়েছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আয় বৃদ্ধি হয়নি। এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘নানা দিক থেকে পুরসভার আয় গত ক’বছরে অনেকটাই বেড়েছে। কিন্তু পাল্লা দিয়ে বেড়েছে খরচও। তাই বিভিন্ন খাতে অপচয় কমানোয় জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উন্নয়নের খাতে খরচ বৃদ্ধির কারণে টাকা দেখা যাচ্ছে না!’ প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরভোট যদি যথা সময়ে হয়, সেক্ষেত্রে এটাই বর্তমান পুরবোর্ডের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। তাই পুর-বাজেটে কিছু চমক থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে পানীয় জল, নিকাশি, সড়ক, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা ক্ষেত্রগুলিতে কত টাকা বরাদ্দ হয়, নজর রাখছে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরও। কারণ, পুরভোটকে মাথায় রেখে রাজনৈতিক দলগুলির ঘুঁটি সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই।