২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে দলীয় সংগঠনকে শক্তিশালী করতে চায় রাজ্যের শাসক দল। সেকথা মাথায় রেখে আগামী দিনে সাংগঠনিক রদবদল হওয়ার কথা তৃণমূল কংগ্রেসে। দলীয় সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে জেলা তৃণমূল সভাপতিদের তিনটি করে নাম সুপারিশ করার কথা বলা হয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে। যে বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেস ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি, সেখানে যিনি প্রার্থী ছিলেন, তাঁকে বলা হয়েছে নাম সুপারিশ করার জন্য। রাজ্য বিধানসভার সিংহভাগ কেন্দ্রে জয়ী হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে দলীয় বিধায়কদের পাশাপাশি জেলা সভাপতিদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নাম সুপারিশ করার জন্য। সাংগঠনিক রদবদলকে ঘিরে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে যথেষ্ট কৌতূহল রয়েছে। যতদূর জানা গিয়েছে, পারফরম্যান্সের ভিত্তিতেই দায়িত্ব দেওয়া হবে। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছে নাম জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। পদ পাওয়ার জন্য ইতিমধ্যে তদ্বির শুরু হয়েছে জেলা সভাপতিদের কাছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন বিধানসভার মোহনপুর ব্লকের সভাপতি করা হয়েছে দাঁতনের বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধানকে। ২০২০ সাল থেকে এই ব্লকে সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মানিক মাইতি। উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় সবচেয়ে বেশি বিধানসভা আসন রয়েছে। এই জেলায় নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করবে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় সাংগঠনিক জেলা সভাপতির পদ শূন্য রয়েছে। এই শূন্য পদে নতুন নিয়োগ করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেসে উদ্যোগ জারি রয়েছে।
পকেটের লোক দিয়ে নয়, দলের প্রতি যাঁরা দায়বদ্ধ, তাঁদেরকেই দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্যের শাসক দল। তিনটি করে নাম সুপারিশ করার কথা বলা হলেও যদি কোথাও পরিবর্তনের প্রয়োজন না থাকে, সেক্ষেত্রে নাম সুপারিশ করার প্রয়োজন নেই, এমনটাও বলা হয়েছে শাসক দলের তরফে। যাঁরা দলের কর্মসূচি সঠিকভাবে পালন করছেন, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করছেন, সেক্ষেত্রে জেলাসভাপতি বা বিধায়ক যদি মনে করেন ওই নেতা বা নেত্রীকে পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই, তবে সেই নেতা বা নেত্রীর উপরেই ভরসা রাখতে চায় দল। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে বলা হয়েছে, পরিবর্তন জরুরি না হলে সুপারিশ করার প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে কলকাতা পুর এলাকায় সাংগঠনিক স্তরে খুব বেশি রদবদলের সম্ভাবনা কম। শাখা সংগঠনের শীর্ষস্তরে দু-একটি পরিবর্তনের সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে। আগামী দিনে বিধায়কদের সঙ্গে ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে মসৃণ সম্পর্কের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। কারণ বিধানসভা নির্বাচনে এই দুই স্তরে নেতানেত্রীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলে বিধানসভায় জয় পেতে খুব একটা অসুবিধা হবে না। তবে, পুরোটাই নির্ভর করছে তৃণমূল সুপ্রিমোর উপর। রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে সাংগঠনিক শক্তির প্লাস-মাইনাস পয়েন্ট মমতার অজানা নয়। ফলে সেকথা মাথায় রেখে নবীন এবং প্রবীণের সমাহারে পূর্ণ শক্তিতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলকে আরও বেশি করে শক্তিশালী করতে চান মমতা।