মহম্মদ মহসিন, উলুবেড়িয়া
হুগলি নদীর পাশে উলুবেড়িয়া পুরসভার বাউড়িয়া থেকে উলুবেড়িয়া শহরে আসার জন্য একাধিক ওয়ার্ড আছে। এই বাঁধের রাস্তা ধরেই বাউড়িয়া থানা, বার্নিং ঘাট হয়ে উলুবেড়িয়া শহর ভায়া চেঙ্গাইল স্টেশন যাওয়ার বাইপাস রাস্তা। পুরো বাঁধের উপর উলুবেড়িয়া পুরসভা রাস্তা ঢালাই করে দিয়েছে। বাঁধের এই রাস্তা দৈনিক হাজার হাজার মানুষ ব্যবহার করে থাকেন।
অথচ বাঁধের পাশে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন চেঙ্গাইলের চককাশী এক নম্বর কলোনির পাশ দিয়ে বয়ে চলা হুগলি নদীর বাঁধের প্রায় ১১০০ মিটার এলাকায় নদীর বাঁধে বিপজ্জনক ভাবে ধ্বস দেখা দিয়েছে। এই ঘটনায় আতঙ্কিত জনপ্রতিনিধি থেকে সাধারণ মানুষ।
এলাকার কাউন্সিলর অতিরঞ্জন অধিকারী অবিলম্বে এই ধ্বস রোধে সেচ দপ্তরকে চিঠি দিয়েছেন। হুগলি নদীর পশ্চিম পাড়ে এই বাঁধের পাশে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের চককাশি একনম্বর কলোনি, পালপাড়া, শরৎপল্লি, বাবুজপাড়া, রাজবংশী পাড়া–সহ একাধিক গ্রাম রয়েছে। এইসব গ্রামে একটি হাইস্কুল–সহ চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। রয়েছে দক্ষিণ–পূর্ব রেলের হাওড়া–খড়্গপুর শাখার চেঙ্গাইল স্টেশন। বাঁধের পাশেই রয়েছে একাধিক কলকারখানা, আইটিআই কলেজ।
এই বাঁধ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য সেচ দপ্তর নদীর দিকে পাড়কে ঢালাই করে বেঁধে দিয়েছিলেন। তবে নদীতে ঢেউ ও বানের ফলে উলুবেড়িয়া পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের পীরবাবার মাজার থেকে প্রায় ১১০০ মিটার সেচ দপ্তরের বাঁধানো সিমেন্টের স্ল্যাব ও কংক্রিট দেওয়াল নদীতে তলিয়ে গিয়েছে।
এর ফলে পুনরায় যে সব ঢেউ ও বান আসছে, তা বাঁধে ধাক্কা খাচ্ছে। ফলে নীচের দিকে ক্ষয়ে যাওয়ায় বাঁধের রাস্তা অনেকটা বসে গিয়েছে। এই কারণে প্রায় ১০০ মিটার বাঁধের রাস্তার ঢালাই উঠে গিয়ে বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ওই ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে টোটো, অটোরিকশা, বাইক এবং চারচাকা গাড়ি বিপদের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নন্দলাল অধিকারী বলেন, ‘অবিলম্বে এই ধ্বস রোধ করা না গেলে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে নদীর জল প্রবেশ করলে সমূহ বিপদের আশঙ্কা।’
নদী–বাঁধের অদূরেই বাড়ি নবারুন আচার্য, অনু আচার্যর। তাঁরা বলেন, ‘আমরা সব সময়ে আতঙ্কে আছি।’ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, এ কথা জানিয়ে একাধিক বার সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের চিঠি দিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন বাসিন্দারা। সেচ দপ্তরের এক আধিকারিক স্বীকার করেন, বাঁধের অবস্থা বিপজ্জনক।
তিনি জানান, ওই ধ্বস রোধে তাঁরা ইতিমধ্যেই প্রকল্প তৈরি করেছেন। সেই প্রকল্পের রিপোর্ট উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। ধ্বস রোধে প্রায় চার কোটি টাকা খরচ হবে বলে ওই আধিকারিক মন্তব্য করেন