রূপক মজুমদার, বর্ধমান
মাধ্যমিক পরীক্ষার সুযোগ নিয়ে কি আইনভঙ্গের চাবিকাঠি হাতে পাওয়া যায়? মাধ্যমিক চলাকালীন বিনা হেলমেটে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে যাতায়াতের দৃশ্য দেখে এই প্রশ্নই সামনে এসেছে। সোমবার জামালপুরে মোটর বাইক দুর্ঘটনায় এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর জখম হওয়ার ঘটনায় তা আরও জোরালো হয়েছে।
এ দিন মাধ্যমিকে ইতিহাস পরীক্ষার দিনেও হেলমেটহীন পরীক্ষার্থীদের অবাধে বাইক, স্কুটিতে যাতায়াত করতে দেখা গিয়েছে। কোথাও দুই পরীক্ষার্থীকে নিয়ে স্কুটি চালাতে দেখা গিয়েছে এক মহিলাকে। তিন জনের কারও মাথাতেই ছিল না হেলমেট। কোথাও হেলমেট ছাড়াই পিছনের সিটে বসে মোবাইলে কথা বলতে দেখা গিয়েছে ছাত্রীকে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার কারণে পুলিশও পদক্ষেপ করতে পারে না। আর সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছেন অভিভাবকরা।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নিজের মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন মা রঞ্জনা ঘোষ। বর্ধমান কার্জন গেটের কাছে তিনি বলেন, ‘বাড়ির কাজ সামলে বের হতে দেরি হয়ে গিয়েছিল। তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে এসেছি। আমার হেলমেট আছে। তবে এটা সত্যি পিছনে বসা ছেলে মেয়ে কারও মাথায় হেলমেট থাকে না। এটা আমাদেরই ভুল।’
পর্ষদের জেলা কনভেনার অমিত ঘোষ হতাশা নিয়ে বলেন, ‘এ নিয়ে আর আমরা কী করতে পারি বলুন। অভিভাবকরাই তো সবচেয়ে বেশি সচেতন হবেন। জীবনের থেকে বড় কিছু তো নেই। চালক, আরোহী দু’জনেই হেলমেট ব্যবহার করুন।’
এ বার পুরুলিয়ার ঝালদাতেও মোটর বাইক দুর্ঘটনায় জখম হয় এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। কয়েকদিন আগে গুসকরায় বাইক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান মঙ্গলকোটের বাসিন্দা এক সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। কোনও ক্ষেত্রেই ছিল না হেলমেট। বর্ধমানের বিসি রোডের ব্যবসায়ী অনিমেষ দাসের কথায়, ‘পুলিশি নজরদারির পাশাপাশি আমাদেরও সচেতনতা বাড়াতে হবে। না হলে কোনওদিন হুঁশ ফিরবে না। আরোহীকে হেলমেটহীন অবস্থায় দেখলেই পুলিশ ফাইন করতে শুরু করলে দেখবেন, সবাই পরতে শুরু করে দিয়েছে।’
বীরহাটার বাসিন্দা সুকান্ত ঘোষের বক্তব্য, ‘আমরাই জেলা ছাড়িয়ে কলকাতা বা অন্য কোথাও গেলে ট্র্যাফিক সিগনাল মানি, হেলমেট পরি। কারণ ওখানে পুলিশ ধরলে আমাদের পরিচিত কোনও নেতাকে ফোন করে ছাড় পাওয়া যাবে না। এখানেও সেটা হওয়া উচিত। পুলিশকে কড়া হতেই হবে।’
এ নিয়ে প্রশাসন কী বলছে? জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্র্যাফিক) সুরজিৎ দে বলেন, '…..'। জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাইক ছাড়াও গাড়ি চালানোর সময়েও সেফটি মেজ়র অবশ্যই মেনে চলা উচিত প্রত্যেকের।’