• ১ টাকা কিলো টমেটো! মারাত্মক ক্ষতি চাষীদের, তবুও এই রাস্তাই বেছে নিচ্ছেন...
    ২৪ ঘন্টা | ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • বিধান সরকার: টমেটো এক টাকা কিলো। তোলার খরচ উঠছে না। জমিতেই শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে টমেটো। গাছ কেটে ফেলতে হবে বলছেন চাষীরা। অসময়ে চাষের পরামর্শ উদ্যান পালন দফতরের। হুগলি জেলায় টমেটো চাষ হয় ১৪ হাজার ১১ হেক্টর জমিতে। টমেটো উৎপাদন হয় প্রায় পঁচিশ হাজার মেট্রিকটন। বলাগড় পান্ডুয়া পোলবা-দাদপুর, চন্ডীতলা-সহ জেলার বিভিন্ন ব্লকে এখন ফলন্ত টমেটো গাছে ভর্তি।

    হুগলির টমেটো বাংলার বাইরের রাজ্যেও যায়। তবে এখন সেই টমেটো যাচ্ছে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা। চাষীদের মতে এক বিঘা টমেটো চাষ করতে পঁচিশ হাজার টাকা খরচ। অথচ টমেটো বিক্রি করে দশ হাজার টাকাও উঠছে না। বর্তমান যা অবস্থা জমিতে ফলন্ত গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। কারণ টমেটো তুলে বাজারে নিয়ে যাওয়ার খরচ উঠছে না টমেটো বেচে। টমেটোর মত হাইব্রিড শশা দু টাকা কিলো, সিম মটরশুঁটি, লাউ সব সব্জির পাইকারি দাম এতটাই কম চাষীর চাষের খরচ উঠছে না। 

    এবারে শীত কালীন সবজি চাষের জন্য ভালো আবহাওয়া ছিল। ঝড় বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়নি। যার ফলে উৎপাদন বেশি হয়েছে। জেলা উদ্যান পালন দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর শুভদীপ নাথ বলেন, যারা সবজি চাষ করে সারা বছর তাদের অসময়ের চাষে উৎসাহী করা হচ্ছে। এছাড়া পলি হাউস তৈরি করে চাষ করা। এই পলি হাউসে সাবসিডি দেওয়া হচ্ছে ৫০ শতাংশ। দু'রকম পদ্ধতিতে আমরা কৃষকদেরকে বিষয়টা বোঝানোর চেষ্টা করছি। খোলা মাঠে চাষ এবং আচ্ছাদনের মধ্যে চাষ। যাতে অসময়ের চেষ্টা করে কৃষক ফসলের উপযুক্ত মূল্য পায়।

    পাশাপাশি যারা সফলভাবে চাষগুলো করছে সেখানে নিয়ে গিয়ে কৃষকদের হাতে কলমে বিষয়টা দেখানো। সামনে ২০ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারী নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে হর্টি ফুড ফেস্টিবল হবে। সেখানে আমরা হুগলি জেলা থেকে আড়াইশো চাষীকে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি। সেখানে প্রযুক্তি আলোচনা হবে অসময়ের চাষ সম্বন্ধে। সেটা যাতে কৃষকরা জানতে পারেন তার জন্য এই চেষ্টা। আলুর ক্ষেত্রে অনেক সময় তাই দেখা যাচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি চাষ করা হয়ে যাচ্ছে।

    যার ফলে কৃষক অনেক সময় দাম পাচ্ছে না। আমরা বলছি আলু চাষের জমির পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে মজুদ করা যাবে এরকম কিছু ফসল কাজ করতে। যেমন হাইব্রিড গাজর খুব লাভজনক চাষ। যেটা আলু সঙ্গে সঙ্গে উঠবে এবং পুজোর সময় বিক্রি করা যাবে। এটা আলুর থেকে তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি হবে। আগাম টমেটো চারা দিয়েছিলাম তা অনেকেই নিতে পারেননি। আমরা হিট টলারেন টমেটো চারা বিলি করছি। এই টমেটোটা উঠবে এপ্রিল মাসে।

    যখন এমনি টমেটো শেষ হয়ে যাবে বাজারে টমেটোর দাম বেড়ে যাবে। আমরা কৃষকদের বলছি যে কোনও ফসল চাষের ক্ষেত্রে আগাম চাষের চেষ্টা করুন আর না হয়তো সিজনের শেষের দিকে চাষ করুন। এর জন্য হুগলি জেলার কৃষি খামারে সবজি উৎকর্ষণ কেন্দ্র রয়েছে রাজ্যের মধ্যে একমাত্র। সেখানে কৃষকরা গাছের চারা যেমন সংগ্রহ করতে পারেন পাশাপাশি তাদেরকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)