এই সময়, আসানসোল: বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও সেই ট্রেন ছাড়ল দুপুর দেড়টা নাগাদ। তবু হাঁফ ছেড়েছেন রেলকর্তারা কারণ, পুণ্যার্থীদের নিয়ে সেই ট্রেন নির্বিঘ্নে আসানসোল ছেড়েছে।
গত রবিবার আসানসোলে বিপর্যয় ও তার আগে দিল্লি স্টেশনে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরে শিক্ষা নিয়েছে আসানসোল রেল ডিভিশন। আর যাতে কোনও বিপর্যয় না ঘটে তার জন্য ২৪ ঘণ্টা আগে থেকে নেওয়া হয়েছিলো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। বার বার আসানসোল স্টেশন পরিদর্শন করে বৈঠক করেন রেলকর্তারা। মূলত তাঁদের লক্ষ্য ছিল, চলতি সপ্তাহে আসানসোল থেকে প্রয়াগরাজের উদ্দেশে রওনা দেওয়া দু’টি স্পেশাল ট্রেন যাতে নির্ঝঞ্ঝাটে স্টেশন ছাড়তে পারে।
এ দিন প্রয়াগরাজের ট্রেনটি ছাড়ার পূর্ব নির্ধারিত সময় ছিল সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে। কিন্তু তার সময় পরিবর্তনের কথা জানায় রেল। সেই কারণে ট্রেনটি দুপুর দেড়টায় আসানসোল ছেড়ে যায়। এ প্রসঙ্গে আসানসোল ডিভিশনের এডিআরএম প্রবীণ কুমার প্রেম বলেন, ‘বেঙ্গালুরু থেকে ট্রেনটি জসিডিতে পৌঁছয় দেরিতে। যে কারণে আসানসোল স্টেশন থেকে প্রয়াগরাজের উদ্দেশে ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হয়েছে।’ যাত্রী নিরাপত্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আসানসোল ডিভিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের পর্যায়ক্রমে ট্রেনে তোলা হয়েছে। একটি হোল্ডিং এরিয়া করা হয়েছিল, যেখান থেকে যাত্রীদের লাইন করে প্ল্যাটফর্মে নিয়ে যাওয়া হয়।’
গত রবিবারের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আসানসোল ডিভিশনের পক্ষ থেকে এ দিন নিরাপত্তায় অতিরিক্ত ব্যবস্থা করা হয়েছিল। স্টেশন চত্বরের বাইরে যাত্রীদের জন্য তৈরি করা হয় অস্থায়ী শেড। ছিল সিসি ক্যামেরার নজরদারি। কোনও যাত্রী যাতে সমস্যার মুখোমুখি না হন, সে জন্য অতিরিক্ত জিআরপি ও আরপিএফ মোতায়েন করা হয়। ট্রেন ছাড়ার আগে আসানসোল স্টেশনে চলে আসেন পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকরাও। তাঁরা রেলকে সবরকমভাবে সহযোগিতা করেছেন।
রেলের এমন ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করেন যাত্রীরা। আসানসোল থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন গিরমিন্ট কোলিয়ারির প্রতিমা দেবী, আসানসোল মুন্সি বাজারের রবীন বর্মন, রেলপারের রামকৃষ্ণ ডাঙালের সঙ্গীতা শর্মা, চিত্তরঞ্জনের রবীন্দ্রনাথ রায়ের মতো যাত্রীরা বলেন, ‘আগেই যদি এমন ব্যবস্থা নেওয়া হতো তা হলে কেউ মারা যেতেন না। আসানসোলেও এত হুড়োহুড়ি হতো না।’ কোনও সমস্যা ছাড়াই যে তাঁরা প্রয়াগরাজের ট্রেনে উঠতে পেরেছেন, তার জন্য রেল আধিকারিকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি আসানসোল থেকে আরও একটি মহাকুম্ভ স্পেশাল ট্রেন ছাড়বে। পাশাপাশি প্রয়াগরাজ যাওয়ার জন্য রয়েছে তিনটি সাপ্তাহিক ট্রেন। রেলকর্তারা এখন ওই দিনগুলোর দিকে তাকিয়ে।