শ্রীকান্ত পড়্যা, তমলুক: জাতীয় সড়ক থেকে যুগলকে থানার সামনে তুলে এনে ৫০ হাজার টাকা দাবি পুলিসের। সেই টাকা দিতে না পারায় চরম হেনস্তা। শেষে ভয় দেখিয়ে স্থানীয় এটিএম থেকে ১০ হাজার টাকা তুলতে বাধ্য করা এবং পুরোটাই হাতিয়ে নেওয়া! এমন অভিযোগ পেয়ে পত্রপাঠ নন্দকুমার থানার তিন পুলিসকর্মীকে সাসপেন্ড করলেন পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিস সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য। তাঁদের একজন নিজামুদ্দিন দফাদার। তিনি থানার কনস্টেবল। অন্যজন থানার গাড়ির চালক রঞ্জন সাঁতরা। তৃতীয়জন এনভিএফ কর্মী শঙ্কর হাজরা। তাঁকে পাকাপাকিভাবে বসিয়ে দেওয়ার জন্য মেদিনীপুরে অবস্থিত এনভিএফের ডিস্ট্রিক্ট কমাডান্টের কাছে সুপারিশ করেছেন পুলিস সুপার। হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তিনজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্তও।’
পুলিস সূত্রেই খবর, মহিষাদল থানার কেশবপুর জালপাই গ্রামের এক যুবক রবিবার বিকেলে প্রেমিকাকে নিয়ে নরঘাটের কাছে একটি হোটেলে খেতে গিয়েছিলেন। ওই যুবতী নন্দকুমার কলেজের ছাত্রী। ফেরার সময় নন্দকুমারে ১১৬বি জাতীয় সড়কে দু’জনকে আটকায় টহলরত পুলিস কর্মীরা। ওই গাড়িতে একজন এএসআই সহ মোট চারজন পুলিস কর্মী ছিলেন। যুগলকে রাস্তা থেকে থানার কাছাকাছি এক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয় বলে অভিযোগ। দাবিমতো টাকা দিতে না পারায় তাঁদের হেনস্তা করা হয়। এরপর ওই যুবককে চাপ দিয়ে নিকটবর্তী একটি এটিএম কাউন্টার থেকে দশ হাজার টাকা তোলানো হয়। সেই টাকা পুলিস কর্মীদের হাতে তুলে দিয়ে নিস্তার পান প্রেমিক যুবক।
বিকেলে বাড়ি ফিরে গোটা বিষয়টি ভগ্নিপতি তন্ময় প্রামাণিককে জানান তিনি। তন্ময়বাবুর বাড়ি মহিষাদল থানার ঘাসিপুর গ্রামে। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি নন্দকুমার থানায় যান। অভিযোগ, ওসি উজ্জ্বল নস্কর তাঁর সঙ্গে ঠিকমতো ব্যবহার করেননি। তা সত্ত্বেও থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পাশাপাশি পুলিস সুপারের কানেও বিষয়টি তোলেন। সোমবার নিগৃহীত যুবক ও তাঁর ভগ্নিপতি পুলিস সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। পুলিস সুপার ওই ঘটনায় জড়িত পুলিস কর্মীদেরও নিজের অফিসে তলব করেন। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরই তিনজনকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেন।