• সিকিউরিটি এজেন্সি নিয়োগে অনিয়ম, জেলা হাসপাতালের টেন্ডার বাতিলের নির্দেশ
    বর্তমান | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: নদীয়া জেলা হাসপাতালে সিকিউরিটি এজেন্সি নিয়োগ নিয়ে বড়সড় অনিয়ম সামনে এসেছে। যার জেরে স্বাস্থ্যভবন থেকে এজেন্সির নিয়োগের টেন্ডার বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে নদীয়া স্বাস্থ্যমহলে ব্যাপক শোরগোল পড়েছে। প্রশ্নের মুখে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। কারণ শক্তিনগর ও জেলা সদর হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব ওই সিকিউরিটি এজেন্সিরই। তবে টেন্ডার বাতিল হলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও ফাঁক থাকবে না বলে দাবি নদীয়া জেলা স্বাস্থ্য মহলের। নদীয়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জ্যোতিষচন্দ্র দাস বলেন, ‘আমরা স্বাস্থ্য ভবনের কাছে অতিরিক্ত দু’ মাস চেয়েছি, ওই সংস্থাকে দিয়ে কাজ করানোর জন্য। দু’ মাস পর আমরা নতুন করে টেন্ডার ডাকব।’


    উল্লেখ্য, নদীয়া জেলা সদর হাসপাতাল এবং শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে দু’টি এজেন্সি একসঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজ করছে। একটি সংস্থার কাছে রয়েছে ৪০ জন্য কর্মী। অপর সংস্থার কাছে‌‌ রয়েছে ৫০ জন কর্মী।  


    জানা গিয়েছে, এক বছর আগে নদীয়া জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে একটি টেন্ডার ডাকা হয়। সেখানে জেলা হাসপাতালে নিরাপত্তা রক্ষীর জন্য এজেন্সি নিয়োগ করা হয়। সেখানে চারটি এজেন্সি আবেদন করে। তার মধ্যে কলকাতার একটি এজেন্সিকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়। গতবছর মার্চ মাসের ৭ তারিখ থেকে এজেন্সি কাজ শুরু করে। কানাঘুষো শোনা যায়, সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার ব্যাপারেও স্বজনপোষণ হয়েছিল। কারণ, সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি কেবলমাত্র ‘সাফাই পরিষেবা’ প্রদানের অভিজ্ঞতার শংসাপত্র জমা দিয়েছিল।‌ ওই সংস্থার কাজের মেয়াদ আগামী মার্চ মাসের ৮ তারিখ শেষ হওয়ার কথা। 


    ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার পর থেকেই সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিয়োগ পদ্ধতি‌ নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। টেন্ডারে অংশগ্রহণকারী এক ঠিকাদার স্বাস্থ্যভবনে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করে। নতুন সংস্থাকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই সেই অভিযোগ জমা পড়ে। সেইমতো স্বাস্থ্য ভবন তদন্ত শুরু করে। বিগত এক বছরে ধরেই এই তদন্ত প্রক্রিয়া চলে। বিভিন্ন সময়ে শুনানি করা হয় স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে। দীর্ঘ তদন্ত প্রক্রিয়ার পর, চলতি বছর জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ স্বাস্থ্যভবন থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের ভিত্তিতে ওই নিয়োগের গোটা প্রক্রিয়াটি বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 


    জেলা হাসপাতাল সুপার জয়ন্ত সরকার বলেন, ‘নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে হচ্ছে। আমাদের করণীয় কী তা জানতে চাওয়া হয়েছে।’ অভিযোগকারী ঠিকাদার ভগীরথ ঘোষ বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট  সংস্থাকে অনিয়ম করে টেন্ডার পাইয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই আমি অভিযোগ করেছিলাম। যার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যভবন তদন্ত শুরু করে। তদন্তে অনিয়ম পাওয়া গিয়েছে। তাই টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু বেআইনিভাবে যে সংস্থা কাজ পেয়েছিল, হাসপাতালে সেই সংস্থাই কাজ করে যাচ্ছে।’
  • Link to this news (বর্তমান)