কর্মীদের ডিএ দিতে রাজ্যের খরচ ২ লক্ষ কোটি: মুখ্যমন্ত্রী
বর্তমান | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: তৃণমূল কংগ্রেস ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দিতে ২ লক্ষ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। সোমবার বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনার জবাবে একথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। সরকারি কর্মীদের ডিএ’র বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বলেও ইঙ্গিত দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বামফ্রন্ট সরকার যখন বিদায় নেয় তখন সরকারি কর্মীরা ৩৫ শতাংশ হারে ডিএ পেতেন। তাঁরা ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত (২০২০ সালের জানুয়ারিতে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ার আগে অব্দি) আরও ৯০ শতাংশ ডিএ দেওয়া হয়। এতে রাজ্য সরকারের মোট খরচ হয়েছে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার কোটি টাকা। বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ার সময় মোট ১২৫ শতাংশ ডিএ যুক্ত হয়ে সরকারি কর্মীদের মূল বেতন আড়াই গুণ বৃদ্ধি পায়। তারপর থেকে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ১৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি হয়েছে। এবারের বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছে, আগামী এপ্রিল থেকে ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি হলে তা ১৮ শতাংশ হবে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বেতন কাঠামো আলাদা বলেও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
ওবিসি সার্টিফিকেট সংক্রান্ত জটিলতার জন্য কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে আছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানান। এই পরিস্থিতির জন্য সরকারের সাফল্যে ‘ঈর্ষান্বিত’ বিরোধীরাই দায়ী বলে ইঙ্গিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ওবিসি সার্টিফিকেট নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশের পর বিষয়টি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। মামলার নিষ্পত্তি হলেই কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলাটির চূড়ান্ত শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিধানসভায় জানান, রাজ্যে ২ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা তাঁর সরকার করেছে। আগামী দিনে আরও কর্মসংস্থান হবে।
জাতিগত সার্টিফিকেট ইস্যু করার ক্ষেত্রে সরকার বিশেষভাবে উদ্যোগী হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় ২ কোটি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে। পরিবারের একজনের জাতিগত সার্টিফিকেট থাকলে যাতে অন্যরা তার সুবিধা সহজে পেতে পারেন ব্যবস্থা করা হয়েছে তারও। মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁর আমলে ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড চিহ্নিত করে বিপুল পরিমাণ খাদ্যসামগ্রীর সাশ্রয় করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, তাঁরা ক্ষমতায় আসার আগে এই রেশন কার্ডগুলির জন্য বরাদ্দ টাকা ঢুকত ‘পার্টি অফিসে’!