নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পলি জমতে জমতে রবীন্দ্র সরোবরের গভীরতা কমে গিয়েছে। জলাশয়ের সব জায়গায় এখন গভীরতা এক নয়। তাই সরোবরের কোথায় কতটা গভীরতা, কোন অংশে কতটা পলি তোলা প্রয়োজন—এসব বুঝতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে সমীক্ষার দায়িত্ব দিল কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। শব্দতরঙ্গ প্রযুক্তি ব্যবহার করে গভীরতা মাপার কাজ হবে। সেই সঙ্গে জলের গুণমান এবং লেকের তলদেশে মাটির উপরিস্তরের অবস্থা পরীক্ষার জন্য পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে কেএমডিএর তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় পরিবেশপ্রেমীরা জানিয়েছেন, সরোবরের গভীরতা কমে আসার কারণে গরমকালে জল শুকিয়ে গেলে অনেক সময় বিভিন্ন জায়গায় চর জেগে ওঠে। লেকের এই অবস্থা মাছ থেকে শুরু করে জলজ বিভিন্ন প্রাণী, জীব বৈচিত্রে প্রভাব ফেলছে। উল্লেখ্য, ৭৩ একর জায়গাজুড়ে থাকা রবীন্দ্র সরোবর ২০০৩ সালে জাতীয় সরোবরের মর্যাদা পায়। সরোবর চত্বরে সব মিলিয়ে ৭৫টি প্রজাতির গাছ রয়েছে। জলজ প্রাণী রয়েছে ১২টির বেশি প্রজাতির। বহুকাল ধরেই সরোবরে ড্রেজিংয়ের দাবি তুলে আসছেন পরিবেশ কর্মীরা। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে এই সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেএমডিএর এক কর্তা বলেন, ‘লেকের বিভিন্ন দিকে ধার বরাবর সাত থেকে আট ফুট গভীরতা রয়েছে। মধ্যবর্তী স্থানে প্রায় ২০ ফুট গভীরতা আছে। কিন্তু এটা আমাদের একটা ধারণা মাত্র। তাই পুরোপুরি বিজ্ঞানভিত্তিক সমীক্ষা হবে। ইতিমধ্যে এই কাজের জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সমীক্ষার পর তারা আমাদের হাতে তুলে দেবে। সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক হবে।’ ওই কর্তা আরও জানান, চলতি বছর লেকে মাছ মরে যাওয়ার ঘটনা খুব একটা ঘটেনি। এবছর জলের গুণমানও ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু সেটা নিয়মিত হওয়া প্রয়োজন। তাই জলের গুণমান পরীক্ষার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে দেওয়া হয়েছে। লেকের তলদেশে উপরিস্তরের মাটিও পরীক্ষা প্রয়োজন। সেটাও পর্ষদ করবে। - ফাইল চিত্র