নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: হাওড়ার সাঁকরাইলে রেল ক্রসিংয়ে দীর্ঘ যানজটে দাঁড়িয়ে থাকার ভোগান্তি থেকে এবার মুক্তি পাবেন যাত্রীরা। এখানে জোরকদমে শুরু হয়েছে ওভারব্রিজ তৈরির কাজ। এর ফলে উপকৃত হবেন সাঁকরাইল, চাঁপাতলা সহ বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দা।
সাঁকরাইল ব্লকের প্রায় মাঝ বরাবর দিয়ে গিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া খড়্গপুর শাখার রেললাইন। রেললাইনের একদিকে রয়েছে সাঁকরাইল থানা, চাঁপাতলা গ্রামীণ হাসপাতাল। অন্যদিকে রয়েছে ধূলাগড়ের সব্জি ও মাছের বিশাল পাইকারি বাজার। ফলে প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে এই এলাকার বাসিন্দাদের রেললাইন পারাপার করতে হয়। দিনের ব্যস্ত সময়ে বারে বারে রেলগেট বন্ধ হওয়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় সাধারণ মানুষকে। রেলগেট খুললেই টোটো, বাইক, অটো, পণ্যবাহী গাড়ির ভিড়ে যানজট লেগে যায় এলাকায়। গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়ায় ট্রেনের পরিবর্তিত সময়সূচি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কখনও কখনও আধঘণ্টারও বেশি সময় ধরে রেলগেট নামানো থাকে। তখন সব থেকে বেশি সমস্যা দেখা দেয়। যানজটে ফেঁসে যায় অ্যাম্বুলেন্সগুলি। অ্যাম্বুলেন্স চালক দীপক সরকার বলেন, ‘বারে বারে গেট পড় যাওয়ায় লম্বা যানজট তৈরি হয়। তখন রোগী নিয়ে যাওয়া যায় না। রোগীর প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা থাকে। তখন আমাদের কিছুই করার থাকে না।’ এই ভোগান্তির অবসান চেয়ে এর আগে বহুবার ওভারব্রিজের দাবি জানিয়েছিলেন সাঁকরাইলের বাসিন্দারা। রেলের উদ্যোগে অবশেষে সেই কাজ শুরু হয়েছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে সাঁকরাইল রেলগেটের পাশে ওভারব্রিজ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এজন্য বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ১২৭ কোটি টাকা। এই ওভারব্রিজ দুই লেনের হবে। ইতিমধ্যেই ২০ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়েছে। গত তিন মাস ধরে এই কাজে গতি এনেছে রেল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বলেন, ‘এই ওভারব্রিজ তৈরি হলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।’ জানা গিয়েছে, ব্রিজ তৈরির ফলে একদিকে যেমন ধূলাগড়ের সঙ্গে সাঁকরাইলের যোগাযোগ সহজ হবে, পাশাপাশি উপকৃত হবেন আনাজ ব্যবসায়ীরাও। চাঁপাতলার সব্জি ব্যবসায়ী দেবু মণ্ডল বলেন, ‘রেলগেট পড়ে থাকার কারণে খুব সমস্যা হচ্ছে। বাজারে আনাজ পৌঁছতে অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। ওভারব্রিজ তৈরি হলে সেই সমস্যা মিটবে।’ সাঁকরাইলের তৃণমূল বিধায়ক প্রিয়া পাল বলেন, ‘এই ওভারব্রিজের দাবি দীর্ঘদিনের। তবে এই কাজ অনেক আগেই করা উচিত ছিল রেলের।’ -নিজস্ব চিত্র