‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’ নিয়ে বদ্ধপরিকর রাজ্য। রাজ্য বাজেটে প্রাথমিকভাবে বরাদ্দ হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। মাস্টার প্ল্যান মনিটরিং কমিটির বৈঠক হয়েছে দু’দিন আগেই। এর মাঝেই ফের জমি জট চন্দ্রেশ্বর খাল চওড়া করার কাজে। সেই কাজে জমি দরকার। কিন্তু জমি দেওয়ার বিরোধিতা করে পোস্টার সাঁটিয়েছে স্থানীয় প্রতিবাদী কমিটি। পাল্টা কোমর বেঁধে নেমেছে সরকারও। জনসচেতনতা বাড়াতে বাড়ি বাড়ি লিফলেট বিলি করছে সেচ দপ্তর। খাল সংলগ্ন জমি প্রায় আড়াই গুণ বেশি দাম দিয়ে কিনতেও রাজি প্রশাসন বলে খবর।
সেচ দপ্তরের প্রস্তাব, বন্যার সময় অতিরিক্ত জল বের করতে হলে দাসপুর-১ ব্লকের বৈকুন্ঠপুর থেকে সুরতপুর পর্যন্ত ৫.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল খনন করতে হবে। অর্থাৎ, চন্দ্রেশ্বর নদী বা খালের সম্প্রসারণ করা হবে দাসপুর ১নং ব্লকের উপর দিয়ে। এক্ষেত্রে প্রায় দশ হাজার কৃষকের কাছ থেকে আনুমানিক ১০৫ একর জমি কিনতে হবে রাজ্য সরকারের সেচ দপ্তরকে। রাজ্য সরকার চাইছে, জোর করে জমি অধিগ্রহণ নয়, দেড় থেকে আড়াই গুণ বেশি দাম দিয়ে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে জমি কিনে নিতে।
যদিও নতুন করে জমি দিতে নারাজ দাসপুরের খাল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। দাসপুর এলাকা জুড়ে তাই দেওয়া হয়েছে পোস্টার। চন্দ্রেশ্বর নদী খনন প্রতিবাদী কমিটির সভাপতি রবীন্দ্রনাথ বেরা বলেন, ‘এখনও আমরা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান চোখে দেখিনি। তবে, পূর্বের প্ল্যান অনুযায়ী আমরা যেটুকু জানি, চন্দ্রেশ্বর খাল চওড়া করা হবে। খাল চওড়া হলে বেসি জল ঢুকবে ও তার ফলে দাসপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লক বন্যার জলে ডুবতে পারে। এটা আমরা হতে দিতে পারি না। ঘাটালের জল ঘাটাল দিয়েই বের করা হোক (ড্রেনেজ করা হোক)। সেই জল বের করতে দাসপুরে কেন নতুন করে খাল খনন করা হবে? এর ফলে তো ঘাটালের জলে দাসপুরকে ডুবতে হবে।’ বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনে নামছে এই কমিটি।
কমিটির এই আন্দোলনের মোকাবিলা করতে সেচ দপ্তর লিফলেট ছাপিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লিফলেট নিয়ে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান সাব কমিটির সদস্যরা দাসপুরে বাড়ি বাড়ি যাবেন। তাঁরা মানুষকে বোঝাবেন এবং সরকার যে জমির জন্য আড়াই গুণ বেশি দাম দিতে রাজি, তাও জানাবেন।
এই বিষয়ে ঘাটালের মহকুমাশাসক তথা মাস্টার প্ল্যান মনিটরিং কমিটির অন্যতম সদস্য সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘কোন প্রতিবাদী কমিটির কথা বলা হচ্ছে তা জানি না। এ নিয়ে আমাদের কিছু বলারও নেই। তবে আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি। সাব কমিটির সদস্যরা মানুষকে বোঝাচ্ছেন। প্রশাসন সমস্ত নিয়ম মেনে এবং ঘাটালবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে।’