এই সময়, ঝাড়গ্রাম: ঘুমাচ্ছিলেন বাড়ির কর্তা। হঠাৎ মাটির দেওয়াল ভাঙার আওয়াজ। ওই শব্দেই রাত দু’টো নাগাদ ঘুম ভাঙে বাড়ির সবার। উঠে এসে দেখেন, সামনে দাঁড়িয়ে দাঁতাল। চিৎকারে–চেঁচামিচিতে ঘুম ভাঙে পাড়ার অন্যদেরও। তাঁরাও চলে আসেন ঝাড়গ্রামের জামিরা গ্রামের গুরুপদ মণ্ডলের বাড়িতে। সবাই মিলে সেই বুনো হাতিকে তাড়িয়ে জঙ্গলের দিকে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু খাবারের খোঁজ সে ফের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে ওই রাতেই পৌঁছয় জামিরার পাশের গামারিয়া গ্রামে।
সেখানে এক প্রথামিক স্কুলের জানলা ভেঙে মিড ডে মিলের চাল খায় দাঁতাল। কিন্তু পুরো চালের বস্তা নাগালে পায়নি। সোমবার গভীর রাতে ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের অন্তর্গত ঝাড়গ্রাম রেঞ্জের পুকুরিয়া বিটের গামারিয়া, জামিরা গ্রামে খাবারের সন্ধানে ওই দাঁতাল এসেছিল বলে জানায় বন দপ্তর।
গামারিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সৌভিক মাহাতো বলেন, ‘এ নিয়ে আমাদের স্কুলে মোট তিন বার বুনো হাতি হানা দিল। স্কুলের লোহার জানলা ভেঙে মিড-ডে মিলের চাল খাবার চেষ্টা করেছে। এ বার কিছু দূরে চালের বাকি বস্তা থাকায় তা আর খেতে পারেনি। সামনে থাকা কিছুটা চাল খেয়েছে। শুধু চাল নয় স্কুলের কিচেন গার্ডেনটিও নষ্ট করে দিয়েছে। বার বার বনদপ্তরে জানানো হলেও কোনও ক্ষতিপূরণ পায়নি।’
মাঝ রাতে প্রথমে জামিরা গ্রামের বাসিন্দা গুরুপদ মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে মাটির দেওয়াল ভাঙে হাতিটি। গুরুপদ বলেন, ‘বারান্দার একটি দেওয়াল কিছুটা ভেঙে দিয়ে গিয়েছে।’
বন দপ্তর সূত্রের খবর, এই এলাকায় দু’টি হাতি রয়েছে। কিন্তু দিনের বেলায় দু’টি হাতি জঙ্গলের মধ্যে থাকলেও সন্ধ্যা হলেই জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে তারা। খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে হানা দেয় বুনো হাতি। এর জেরে অনেক সময়ে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে হাতির সামনে পড়ে প্রাণ যায় গ্রামবাসীদের। জঙ্গল লাগোয়া স্কুলে কোনও পাঁচিল নেই। তাই প্রায়ই স্কুলের মধ্যে হাতি ঢুকে পড়ছে। বিষয়টি ব্লকের মিড-ডে মিল দপ্তর এবং অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিসেও জানানো হয়েছে বলে প্রধান শিক্ষক জানান। ঝাড়গ্রামের বন দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, ‘স্কুল বা গ্রামবাসী নির্দিষ্ট ফর্ম ফিলাপ করে জমা দিলে, তা তদন্ত করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’