• ‘নিরাপত্তা পেলে সারারাত খোলা রাখা হবে দোকান!’
    এই সময় | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়, কোচবিহার: ঘড়ির কাঁটায় রাত তখন ১০টা। একের পর এক বন্ধ হতে শুরু করে ওষুধের দোকান। রাত ১১টা বাজতে না-বাজতেই গোটা এলাকা শুনশান। দোকানের শাটারের সামনের জায়গাটার দখল নেয় পথকুকুরের দল। এ ছবিটা খোদ কোচবিহার শহরের৷

    এ দিকে প্রয়োজনীয় ওষুধের জন্য রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের দিশেহারা হয়ে ছুটে বেড়াতে হয় রাতের শহরে অলিগলি। না-হলে নিরুপায় হয়ে অপেক্ষা করতে হয় পরের দিন সকালের।

    এই শহরের একটা অন্য ছবিও আছে। রাত যত বাড়ে মদ, গাঁজা, ব্রাউন সুগারের কারবারও বাড়তে থাকে। একটা ফোনেই মিলে যায় নেশার দ্রব্য। মাহুল কর নামে কোচবিহারের এক বাসিন্দা বলছেন, 'রাত গভীর হলেও কোচবিহার শহরে মদ পাওয়া যায়। অথচ প্রয়োজন মতো ওষুধ মেলে না।’

    রাতে ওষুধের দোকান বন্ধ থাকার সমস্যা বহু দিনের পুরোনো। কোচবিহার শহর তো বটেই, এমজেএন হাসপাতাল লাগোয়া সব দোকান রাতভর বন্ধ থাকে। অভিযোগ, লিচুতলা মার্কেটে একটি ওষুধের দোকান 'দিবারাত্রি খোলা' থাকার কথা থাকলেও রাতে শাটার নামিয়ে ব্যবসায়ীরা ঘুমিয়ে পড়েন। তারস্বরে বহু ডাকাডাকি করেও অনেক সময়ে তাঁদের ঘুম ভাঙে না৷

    চিকিৎসার প্রয়োজনে মূলত কোচবিহারের ভরসা এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। প্রতিরাতে জরুরি প্রয়োজনে বহু রোগী এই হাসপাতালে ছুটে আসেন৷ এ ছাড়াও শহর ও শহর লাগোয়া এলাকায় অসংখ্য বেসরকারি হাসপাতালও আছে৷ কিন্তু তারপরেও ওষুধ না-পাওয়ার চেনা ছবিটা কিছুতেই বদলাচ্ছে না।

    কিন্তু শহরের মাঝেও রাতে ওষুধের দোকান খোলা রাখতে ওষুধ ব্যবসায়ীদের অনীহা কেন? ব্যবসায়ীদের দাবি, রাত বাড়লেই দোকানে চড়াও হচ্ছে সমাজবিরোধীরা। এ মাসেই শহরের কলাবাগান চৌপথীতে রাতে ওষুধের দোকানে হানা দিয়ে দোকানের মালিক ও কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে৷ একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে লিচুতলা মার্কেট ও হাসপাতালের কাছে একটি ওষুধের দোকানেও।

    ওষুধ ব্যবসায়ী শেখর মিত্র বলেন, ‘রাতে ওষুধ ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নেই। পুলিশের নিরাপত্তা পেলে আমরা দোকান খোলা রাখতে রাজি৷’ একই বক্তব্য বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক কাজল ধরেরও। পুলিশ জানিয়েছে, ওষুধ ব্যবসায়ীদের হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া হয়েছে। সমস্যা হলেই পদক্ষেপ করবে পুলিশ।

  • Link to this news (এই সময়)