চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
বাট্টা বেশি নেওয়ার অভিযোগে সরকারি ধান ক্রয় কেন্দ্র থেকে মুখ ফিরিয়েছেন কৃষকরা। তাই সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পুরণ হচ্ছে না। কৃষকদের ফোন করে ডাকতে হচ্ছে খাদ্য দপ্তরকে। কোচবিহার জেলাজুড়ে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। খাদ্য দপ্তরের ধান কেনার দায়িত্ব থাকা অফিসাররা যে সব কৃষকদের নাম রেজিস্ট্রেশন হয়েছে, তাঁদের বার বার করে ফোন করে ধান বিক্রির আবেদন জানাচ্ছেন।
গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু করেছে খাদ্য দপ্তর। খারিফ মরশুমের আমন ধান ৩১ মার্চ পর্যন্ত কেনা হবে। কোচবিহার জেলাকে সবমিলিয়ে ২ লক্ষ ১৫ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তবে সেই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে হিমশিম দশা খাদ্য দপ্তরের। জেলার ৪৪টি কেন্দ্র থেকে ধান কিনছে খাদ্য দপ্তর। পাশাপাশি স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং সোসাইটিগুলোও ধান কেনার কাজে রয়েছে। তারপরেও চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১ লক্ষ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনেছে তারা। এখনও ৮২ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা বাকি রয়েছে। সরকারকে ধান বিক্রির জন্য জেলার ৬৬ হাজার কৃষক রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। তার মধ্যে ধান দিয়েছেন ৪৪ হাজার কৃষক। তাই বাকিদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে এখন ফোন করে ডাকছে খাদ্য দপ্তর। পাশাপাশি আরও বেশি করে প্রচারের রাস্তায় নেমেছে তারা।
সরকারকে কৃষকদের ধান বিক্রিতে অনীহার কারণ বেশি করে বাট্টা কেটে নেওয়া। সাধারণ ভাবে যত পরিমাণ ধান বিক্রির জন্য আসে, তার থেকে ধুলো ও ভিজে থাকার কারণে একটা অংশ কেটে নেওয়া হয়। এটাকেই বাট্টা বলা হয়। কোচবিহারে কৃষকদের থেকে নানা অজুহাতে বাট্টা বেশি করে কাটার অভিযোগে কৃষকরা আর সরকারি কেন্দ্রমুখো হচ্ছেন না। পাশাপাশি কৃষকরা সরকারের কাছে রেজিস্ট্রেশন করলেও ধান বিক্রি করতে এসে বায়োমেট্রিক মেলানো–সহ হাজারো ঝক্কি পোহাতে চায় না। ফড়েরা বহু গ্রামে ঘুরে নগদ টাকায় ধান কিনেছেন। তাই বাড়িতে বসে নগদ টাকায় পেয়ে ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন তাঁরা। আর যার প্রভাব পড়ছে সরকারি প্রক্রিয়াতে।
এ বিষয়ে কোচবিহার জেলা খাদ্য নিয়ামক মানিক সরকার বলেন, ‘লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হবে। তার জন্য সকলে মিলেই কাজ করছে। আমন ধান কেনার পর কিছু বোরো ধানও কেনা হবে।’ আর তাতে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাবে বলে আশাবাদী তিনি।