হজরতের মুন্ডু কাটার পর মদ খেয়ে ফূর্তি করেছিল ওরা, দত্তপুকুরে ঠিক কী ঘটেছিল?
আজ তক | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নৃশংস খুনের পর মদ খেয়ে আনন্দে মেতে ওঠে অভিযুক্ত জলিল ও তাঁর স্ত্রী সুফিয়া। খুনের পরের দিনও স্বাভাবিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে তারা। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের কড়া জেরায় ফাঁস হল ভয়ংকর পরিকল্পনার নেপথ্যের গল্প।
কীভাবে খুনের ছক কষেছিল জলিল ও সুফিয়া?পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী: ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধে: সুফিয়ার ফোনে হজরতকে ডাকা হয় 'রাতের পার্টির' ছুতোয়। বামনগাছি স্টেশনে নেমে হজরত নিজেই মদ কিনে জলিলের বাড়িতে আসেন। এর আগেই জলিল দা ও হাসুয়া ধার করে তৈরি রেখেছিল। কেরোসিন তেলও কিনে মজুত রাখে, হাত-পা পুড়িয়ে প্রমাণ লোপাটের জন্য।
ঘটনার সময়: সন্ধ্যা ৭:৪০ মিনিটের সময় নির্জন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয় হজরতকে। পরিকল্পনা মতো দু’জনে মিলে হজরতের উপরে আক্রমণ চালায়। মুণ্ডু কেটে আলাদা করে, হাত-পা বেঁধে আগুনে পুড়িয়ে দেন।
খুনের পর কী করেছিল জলিল-সুফিয়া?
ঘটনাস্থল ছেড়ে বাড়ি ফিরে হজরতেরই কেনা মদ খায় দু’জনে। পরদিন সকালে গ্রামের লোকজন দেহ দেখতে এলে সঙ্গেও যায় তারা, স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করে। হজরতের স্ত্রী ফোন করলে নিখোঁজ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয় জলিল, যাতে সন্দেহ এড়ানো যায়। পরিকল্পনা মতো ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে জলিল জম্মু পালিয়ে যায়।
কীভাবে ফাঁসল জলিল-সুফিয়া?
হজরতের স্ত্রীর ফোনেই ঘটে বিপত্তি! খুনের দিন হজরত জলিলের বাড়ি যাচ্ছে বলে বেরিয়েছিল, যা পুলিশকে সন্দেহ জাগায়। জলিলের পরিকল্পনা ছিল মুন্ডু লুকিয়ে রাখলে দেহ শনাক্ত হবে না, তবে পুলিশের তৎপরতায় সেই ধারণা ভেঙে যায়। সুফিয়া তদন্ত ঘোরানোর জন্য চোরের দলের বিবাদ ও ৪০০ গ্রাম সোনার প্রসঙ্গ তোলে। কিন্তু জলিল গ্রেফতার হওয়ার পর পরিকল্পনার প্রতিটি স্তর ফাঁস হয়ে যায়।
তদন্তকারীদের অবাক করেছে কী?
খুনের পর জলিল-সুফিয়ার 'স্বাভাবিক' থাকার চেষ্টা। নির্মম পরিকল্পনার সূক্ষ্মতা ও ঠান্ডা মাথার আচরণ। প্রমাণ লোপাটে মুণ্ডু লুকিয়ে রাখার ভয়ংকর চেষ্টা। বারাসতের এই নৃশংস খুন তদন্তকারীদেরও স্তম্ভিত করেছে। ঠান্ডা মাথায় খুনের পরিকল্পনা, মদ্যপানে উদযাপন এবং ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্লিপ্ত অভিনয়—সব মিলিয়ে ভয়ঙ্কর চিত্র উঠে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, আদালতে চার্জশিট পেশের জন্য প্রমাণ জোগাড়ের কাজ চলছে।