ট্যাংরায় রক্তলীলায় রহস্য, একসঙ্গে সবাই সুইসাইড করছিলেন? খুন-তত্ত্বও ওড়াচ্ছে না পুলিশ
আজ তক | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
কলকাতার ট্যাংরায় তিনজনের রহস্যমৃত্যুকে ঘিরে ক্রমশ বাড়ছে জল্পনা। গত পরশুর পর থেকে বাড়ি অন্ধকার ছিল বলে দাবি প্রতিবেশীর। ঘটনাস্থলে পুলিশ কুকুর আনিয়ে চলছে তদন্ত। এদিন ট্যাংরার ওই বাড়িতে আসেন কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভর্মা। সুইসাইড নাকি খুন? জানালেন সিপি।
'কাল বিকেল থেকে ঘর অন্ধকার', দাবি এক প্রতিবেশীর
স্থানীয় এক প্রতিবেশী জানান, 'কাল বিকেল থেকে ঘর অন্ধকার। গত পরশু সন্ধেয় তাঁকে শেষবার দেখেছিলাম ওদের স্বামীদের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যেতে। কাল সারাদিন কাজের লোককেও দেখতে পাইনি। বাড়ির মহিলারা ছাদে সন্ধে দিতেন। কাল থেকে দেখছি বাড়ি অন্ধকার। ভাবছিলাম হয়তো ঘুরতে গেছে। গত পরশু ওনাদের শেষবার ছাদে দেখেছিলাম। জামাকাপড় মেলতে উঠেছিলেন তাঁরা। এরপর থেকে আর ঘরে দেখিনি।'
কী বললেন কমিশনার মনোজ ভর্মা?
কমিশনার মনোজ ভর্মা বলেন, "ট্যাংরায় তিন মহিলার দেহ মিলেছে এর মধ্যে দু'জন মহিলার শরীরে ক্ষতচিহ্ন আছে, আরেকজন ১৪-১৫ বছর বয়সী এক কিশোরীর গায়ে ক্ষত নেই। অভিষিক্তায় একটি দুর্ঘটনার খবর পেয়েছি। এত জানা যায় ওই মহিলার স্বামী তাঁরা। আহতদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। এই ঘটনা তারা ঘটিয়েছে নাকি অন্য কেউ তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আহতরা বয়ান দিয়েছেন, পুলিশ তা মিলিয়ে দেখছে। ময়নাতদন্ত না হলে বলা মুশকিল আত্মহত্যা নাকি খুন। সিসিটিভি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একটি ফ্লোরে তিনটি আলাদা ঘরে এই তিন মহিলার দেহ পাওয়া গেছে।"
ট্যাংরায় ৩ জনের দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য
বুধবার সকাল থেকেই ট্যাংরায় একই পরিবারের ৩ জনের দেহ উদ্ধার ঘিরে ঘনাল রহস্য। এক কিশোরী ও ২ মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। তাঁদের হাতের শিরা কাটা অবস্থায় মেলে। পাশাপাশি, এদিনই অভিষিক্তার কাছে একটি দুর্ঘটনা ঘটে। আহত ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পুলিশের দাবি, ওই ৩ জনও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁরাই বয়ানে জানান ট্যাংরায় বাড়িতে ৩ জনের দেহ রয়েছে। সেই মতো ট্যাংরার ওই বাড়িতে গিয়ে ৩ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়। কী কারণে মৃত্যু, তা স্পষ্ট নয়। আত্মহত্যা নাকি মৃত্যুর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ট্যাংরা থানার পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান কলকাতার পুলিশের জয়েন্ট সিপি ক্রাইম রূপেশ কুমার।
সিপি ক্রাইম রূপেশ কুমার কী জানান?
গাড়ি দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে সিপি ক্রাইম রূপেশ কুমার বলেন, "৩টে ১৫ মিনিটে দুর্ঘটনা হয়। তিনজন হাসপাতালে ভর্তি। তাঁরাও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁদের মধ্যে একজন জানিয়েছেন, ৩ মহিলা আত্মহত্যা করেছেন খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে। ওই দুর্ঘটনার সঙ্গে ট্যাংরার ঘটনার যোগ রয়েছে। আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তার জন্য এমন ঘটনা হয়ে থাকতে পারে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।"
পুরো পরিবারের একত্রে আত্মহত্যার চেষ্টা নাকি খুন, ময়নাতদন্ত ও আহতদের বয়ান মিলিয়ে দেখার পরই সত্য প্রকাশ্যে আসবে।